Tuesday, July 1, 2014
স্বামীবাগ ইস্কন মন্দিরে মুসল্লিদের সহিংস হামলা
গতকাল সোমবার রাতে স্বামীবাগ ইস্কন মন্দিরে দেড় শতাধিক মুসল্লি হামলা করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হিন্দুবার্তার নিজস্ব প্রতিনিধি জানায়, রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। তারাবীর নামাজ শেষ করে মুসল্লিরা মন্দিরে দলবদ্ধভাবে হামলা করে। হামলার পরপরই মন্দিরের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। শতাধিক মুসল্লি মন্দিরের প্রাচীরের বাইরে থেকে ভেতরে ইট-পাথর ছুড়ে মারে। এতে মন্দিরের জলের ট্যাংকসহ বেশকিছু স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তারা মন্দিরের গেইটে লাথির পর লাথি মারে আর অশ্রাব্য ও জিহাদী ভাষায় হিন্দুদের ও মন্দিরের নামে গালিগালাজ করে।
মন্দিরের ভক্তদের অভিযোগ, হামলার সময় পুলিশ উপস্থিত ছিল। তাদের নীরব ভূমিকা নিয়ে সবাই প্রশ্ন তোলেন। তবে পরবর্তীতে অধিক সংখ্যক পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েনের পর রাত বারটার মধ্যে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
হামলাকারী মুসল্লিদের দাবি তাদের নামাজের সময় মন্দিরের অনুষ্ঠানের শব্দ মাইকে সাউন্ড দিয়ে বাজানো হয়েছে। তবে মন্দিরে উপস্থিত ভক্তবৃন্দ হিন্দুবার্তাকে জানান, সন্ধ্যার পর থেকেই মন্দিরের কোন সংকীর্ত্তন বা অনুষ্ঠান মাইকে বাজানো হয়নি। তারা জানান, আমরা হিন্দুরা চিরকালই সকল ধর্মের সহাবস্থান ও সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করি। এদেশে সংখ্যাগুরু মুসলিমদের নামাজে বিঘ্ন ঘটিয়ে মন্দিরে মাইক বাজানো হবে এমন কথা কোন হিন্দু কল্পনাও করে না। এমতাবস্থায় মুসল্লিদের অভিযোগ একান্তই উদ্দেশ্য প্রণোদিত ছাড়া আর কিছুই নয়।
এদিকে দ্যা বাংলাদেশ হেরাল্ড নামের একটি অখ্যাত অনলাইন পত্রিকা উক্ত ঘটনায় হিন্দুদেরকে দোষী করে চরম বিকৃত ও সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক একটি সংবাদ পরিবেশন করে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হিন্দুবার্তা প্রতিনিধি জানায় সংবাদটির নিরানব্বই ভাগই মিথ্যা ও বিকৃত। পাঠকদের জ্ঞাতার্থে সংবাদটি হুবহু এখানে প্রকাশ করা হলো।
“তারাবীর নামাজে বাধা, মন্দিরের রথযাত্রি এবং মুসল্লিদের মধ্যে সংঘর্ষ : মসজিদে তারা ঝুলানোর হুমকি পুলিশের”
বিডি হেরাল্ডঃ তারাবীর নামাযে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে স্বামীবাগ মন্দিরের রথযাত্রি এবং মসজিদের মুসল্লিদের মদ্ধে সংঘর্ষ হয়। মন্দিরের হিন্দু ধর্মাাবলম্বিদের ইটের আঘাতে এক মুসল্লির অবস্থা আশঙ্কাজনক।
৮২ নং স্বামীবাগে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী ‘স্বামীবাগ জামে মসজিদ’ অপরদিকে ‘স্বামীবাগ মন্দির’ রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত একটি প্রধান হিন্দু মন্দির।
অনুসন্ধানে জানা যায় মসজিদ এবং মন্দির দুটি পাশাপাশি অবস্থিত হয়ার কারনে ইবাদতে বিঘ্ন হওয়ার কারনে বেশ কিছুদিন ধরেই স্থানিয় হিন্দু সম্প্রদায় এবং মসজিদের মুসল্লিরা একপক্ষ অন্য পক্ষকে দোষারোপ করছিল।
মন্দিরের পক্ষ থেকে ৭ দিনব্যাপী রথযাত্রার আয়োজন করা হয়। স্থানিয় মুসল্লিরা দবি করেন এই রথযাত্রার বাদ্য বাজনার কারনে তাদের ইবাদতে সমস্যা হচ্ছিল। কিন্তু সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য মসজিদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করা হয়নি।
অপর দিকে আজ রথযাত্রায় অসুবিধার কারনে তারাবির নামাজ চলাকালে মন্দিরের পক্ষ থেকে নামাজ রাত ১০টার মধ্যে শেষ করবার জন্য চাপ দেওয়া হয় মসজিদ কতৃপক্ষকে। কিন্তু তারাবির নামাজ দাবি মোতাবেক যথাসময়ে শেষ না করার কারনে মসজিদের মুসল্লিদের ঢিল ছোড়া শুরু করে মন্দিরের পক্ষথেকে। এসময় মসজিদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করা হলে মন্দির থেকে একদল লোক দা, লাঠি নিয়ে বের হয়ে মুসল্লিদের ধাওয়া করে। এসময় একজন মুসল্লি ইটের আঘাতে মারাত্মকভাবে যখম হয়।
কিন্তু ঘটয়ার পরপর ঘটনাস্থলে গেণ্ডারিয়া থানার এসআই অমল কৃষ্ণ উপস্থিত হয়। এবং মসজিদের ইমাম সাহেবকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালান। এসময় উপস্থিত মসজিদের মুসল্লিগন এবং মসজিদ কমিটির লোকজনের হস্তক্ষেপে ইমাম কে ছেড়ে দেন এসআই অমল কৃষ্ণ। মসজিদ কমিটির সভাপতি মহাম্মাদ সিরাজ বিডিহেরাল্ড কে জানান ‘আগামীকাল (মঙ্গলবার) থেকে তারাবির নামাজ রাত ১০টার মধ্যেই শেষ করতে করতে হবে। অন্যথায় মন্দিরের কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার কারনে মসজিদে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। ” বলে হুমকি দেন গেন্ডারিয়া থানার এসআই অমল কৃষ্ণ।
এসময় মসজিদ কমিটির সভাপতি এসআই অমল কৃষ্ণের কাছে তারাবির নামাজ কিভাবে দ্রুত শেষ করব জানতে চাইলে এসআই অমল কৃষ্ণ দ্রুত পড়ে তারাবির নামাজ সেশ করবেন করবেন বলে জানান।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৯ গাড়ি দাঙ্গা পুলিশ এসে এখন পুরো ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানিয় অনেক মুসল্লিরা তাদের বাসায় ফিরতে না পেরে আশেপাশের মসজিদে অবস্থান করছে বলে রাত ১টা ৪০ মিনিটে পর্যন্ত জানা যায়। বিশ্বস্ত সুত্র থেকে জানা যায় ঢাকা ৬ আসন এর সংসদ কাজী ফিরোজ রশিদ বর্তমানে সেখানে উপস্থিত হয়েছেন।
এ সময় কাজী ফিরোজ রশিদএর উপস্থিতেই মন্দিরের ভিতর থেকে শ্লোগান দিতে থাকে “মন্দিরে হামলা কেন,বিচার চাই। মসজিদে হামলা দেও!”
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment