ব্যাখ্যা করার আগে একটি বিষয় বলে নেই,--দ্রোপদী বাসুদেব কৃষ্ণকে প্রশ্ন করেছিলেন, আপনি কি বহুপতিকে সমর্থন করছেন? তখন দৃঢ় কণ্ঠে বাসুদেব কৃষ্ণ বলেছিলেন, না। এটিকে ধর্মের নাম দিয়ে আমি সমগ্র স্ত্রীলোকের হৃদয়ে দুঃখ দিতে পারি না। এ অধর্ম, আর এ অধর্মই থাকবে। কিন্তু তোমার হৃদয়ের করুনা তোমাকে দিয়ে এই নির্ণয় করিয়েছে। করুনা তো ধর্মের আঁধার। আর এই বিষয়টি তোমার জন্য, কেবল তোমার জন্য পাপ নয়।
দ্রৌপদী এ সমাজের মেয়েদের মতো কোনও সাধারণ মেয়ে ছিলেন না। দ্রুপদ রাজার যজ্ঞের অগ্নি থেকে তাঁর জন্ম হয়েছিল। পূর্বজীবনে তিনি এক ঋষির কন্যা ছিলেন। অতি কঠোর তপস্যা করে তিনি শ্রী শিব ঠাকুরের প্রীতি সাধন করেছিলেন। তখন প্রসন্ন হয়ে শিব ঠাকুর তাঁকে বর দিতে চাইলে তিনি করজোড়ে শিব ঠাকুরের কাছে পতি লাভের বাসনা ব্যাক্ত করেন। “হে মহাদেব, যদি প্রসন্ন হয়ে থাকেন, তবে যাতে আমি সর্বগুণ সম্পন্ন পতি লাভে চরিতার্থ হতে পারি, এরূপ বর প্রদান করুন।' এই কথা পাঁচবার উচ্চারণ করেন এবং প্রতিবারইশিব ঠাকুর ‘তথাস্তু’ বলেছিলেন। তারপর শিব বলেন,“হে কন্যা,তুমি পাঁচবারই পতি বাসনা করেছ, তাই পরজন্মে রাজকন্যা রূপে জন্ম নিয়ে দেব গুনসম্পন্ন পঞ্চপতি লাভ করবে।” তারপর পরজন্মে সেই ঋষিকন্যা মহর্ষি উপযাজ কৃত যজ্ঞ থেকে উত্থিতা হন। দ্রুপদ রাজার কন্যারূপে তিনি দ্রৌপদী নামে আখ্যাতা হন। তারপর তাঁর পঞ্চপতি হওয়ার ঘটনাটিও ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিগণ সমর্থন করেছেন।

No comments:
Post a Comment