Translate

Monday, August 18, 2014

প্রশ্ন: মহাকর্ষ ও অভিকর্ষ বা মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সম্পর্কে হিন্দুশাস্ত্র কী বলে? এ বিষয়ে হিন্দু বিজ্ঞানীদের কোন অবদান আছে কি?



উত্তর:
আধুনিক বিশ্বে সকলের ধারণা মহাকর্ষ ও অভিকর্ষ শক্তি নিউটন প্রথম আবিষ্কার করেছেন। অনেকেই জানেন না যে, এ বিষয়ে হিন্দুদের মূল ধর্মগ্রন্থ বেদে স্পষ্টভাবে আলোচনা করা হয়েছে।

সবিতা যন্ত্রৈঃ পৃথিবী মরভণাদস্কম্ভনে সবিতা দ্যামদৃংহৎ।
অশ্বমিবাধুক্ষদ্ধু নিমন্তরিক্ষমতূর্তে বদ্ধং সবিতা সমুদ্রম ॥ ঋগ্বেদ, ১০/১৪৯/১
অনুবাদ: সূর্য রজ্জুবৎ আকর্ষণ দ্বারা পৃথিবীকে বাঁধিয়া রাখিয়াছে। নিরাধার আকাশে দ্যুলোকের অন্যান্য গ্রহকেও ইহা সুদৃঢ় রাখিয়াছে। অচ্ছেদ্য আকর্ষণ রর্জ্জুতে আবদ্ধ, গর্জনশীল গ্রহসমূহ নিরাধার আকাশে অশ্বের ন্যায় পরিভ্রমণ করিতেছে।

দেখুন, আকাশ যে ‘নিরাধার’ এবং ‘রজ্জুবৎ আকর্ষণ’ অর্থাৎ মহাকর্ষ শক্তির দ্বারাই যে সেই নিরাধার আকাশে সূর্য ও গ্রহসমূহ নিজ অক্ষরেখায় সুদৃঢ় রয়েছে -এখানে সেকথা বলা হয়েছে। বিশ্বের প্রভাবশালী অনেক ধর্মগ্রন্থে আকাশকে স্পষ্টভাবে ‘পৃথিবীর ছাদ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। অথচ এই সব ধর্মমতের জন্মেরও হাজার বছর পূর্বে বেদে আর্য ঋষিগণ আকাশকে ‘নিরাধার’ অর্থাৎ পৃথিবীকে ও গ্রহসমূহকে শূন্যে ভাসমান বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন।

আরও লক্ষণীয়, মহাকর্ষ শক্তিতে আবদ্ধ গ্রহসমূহ যে নিরাধারে অর্থাৎ মহাশূন্যে স্থির নয়, বরং পরিভ্রমণ করছে নিজ কক্ষপথে -এই তত্ত্বও আবিষ্কার করেছিলেন বৈদিক ঋষিগণ। এমনকি সূর্য নিজেও যে তার নিজস্ব কক্ষপথে চলছে সেই অত্যাশ্চর্য গূঢ় বিজ্ঞানও আলোচিত হয়েছে নিম্নের মন্ত্রে :

আকৃষ্ণেন রজসা বর্তমানো নিবেশয়ন্নমৃতং মর্তঞ্চ।
হিরণ্ময়েন সবিতা রথেনা দেবো যাতি ভুবনানি পশ্যন্ ॥ ঋগ্বেদ, ১/৩৫/২
অনুবাদ: সূর্য আকর্ষণযুক্ত পৃথিব্যাদি লোক-লোকান্তরকে সঙ্গে রাখিয়া নশ্বর-অবিনশ্বর উভয় পদার্থকে নিজ নিজ কার্যে নিযুক্ত রাখিয়া এবং মাধ্যাকর্ষণ রূপে রথে চড়িয়া যেন সারা লোকান্তর দেখিতে দেখিতে গমন করিতেছে।

খুব অবাক হতে হয়, পৃথিবী যেমন চাঁদকে সঙ্গে নিয়ে সূর্যের চারপাশে প্রদক্ষিণ করছে, তদ্রুপ সূর্যও যে তার গ্রহ-উপগ্রহসমূহকে সঙ্গে নিয়ে নিজের কক্ষপথে গমন করছে -এই গভীর জ্ঞানও পবিত্র বেদে আলোচিত হয়েছে।

মহাবিজ্ঞানী ভাস্করাচার্য (১১৫০ খ্রি:) তাঁর ‘সিদ্ধান্ত শিরোমণি’ নামক জ্যোতিঃশাস্ত্রের গোলাধ্যায়ে উল্লেখ করেছেন-

“আকৃষ্টি শক্তিশ্চ মহী তয়া যৎ স্বস্থং স্বাভিমুখী করোতি।
আকৃষ্যতে তৎ পততীব ভাতি সমে সমন্তাৎ কুবিয়ং প্রতীতিঃ॥”
অর্থাৎ “সর্ব পদার্থের মধ্যে এক আকর্ষণ শক্তি বিদ্যমান রহিয়াছে, যে শক্তি দ্বারা পৃথিবী আকাশস্থ পদার্থকে নিজের দিকে লইয়া আসে। যাহাকে ইহা আকর্ষণ করে তাহা পতিত হইল বলিয়া মনে হয়।”

অর্থাৎ প্রাচীন ঋগ্বেদ শাস্ত্রের পাশাপাশি ব্যক্তি হিসেবে বিবেচনা করলেও হিন্দু বিজ্ঞানী ভাস্করাচার্য (১১১৪-১১৮৫) বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনের (১৬৪২-১৭২৭) জন্মেরও কমপক্ষে পাঁচশত বছর পূর্বে মহাকর্ষ শক্তি আবিষ্কার করে তাঁর গ্রন্থ ‘সিদ্ধান্ত শিরোমণি’তে আলোচনা করে গিয়েছেন।

আপনি কি জানেন?


বাংলা সাত বারের নাম ও
বাংলা বার মাসের নাম হিন্দু
দেবতাদের নাম
অনুসারে হয়েছে?তাহলে দেখুন
শনিবার-শনি দেবতার নাম
অনুসারে
রবিবার-রবি বা সূর্য দেবতার
নাম অনুসারে
সোমবার-সোম বা শিব দেবতার
নাম অনুসারে
মঙ্গলবার-ধূপ বা দ্বিপের নাম
অনুসারে
বুধবার_বৃহস্প্র
তিবার_শুক্রবার- গ্রহের নাম
অনুসারে
বৈশাখ-কীর্ত্তন নাম অনুসারে
জৈষ্ঠ-অগ্নি দেবতার নাম
অনুসারে
আষাঢ়-আষাঢ়ি পূর্ণিমার নাম
অনুসারে
শ্রাবন-ব্রাক্ষ্ মা দেবের নাম
হতে
ভাদ্র-শ্রীকৃষ্ণ ের বাঁশি হতে
আশ্বিন-অশ্বিনী কুমারের নাম
হতে
কার্তিক-কার্তিক দেবতার
নাম অনুসারে
অগ্রহায়ন-সূর্য দেবতার
পরিক্রমণ হতে
পৌষ-পার্বন হতে আগত
মাঘ-তীর্থস্হান হতে আগত
ফাল্গুন-জলন্ত কাঠ বা যজ্ঞ
হতে আগত
চৈত্র-বাসন্তী দেবীর
শাড়ি হতে আগত
মূলত সূর্যকে কেন্দ্র করে এসব
নামের উৎপত্তি ।সম্রাট আকবর
আরবের সাথে হাত মিলিয়েও এই
নামগুলি পরিবর্তন
করতে পারে নাই ।আর পারবেও
না.

গীতা তথ্য কনিকা



গীতা পড়লে ৫টি জিনিষ সর্ম্পকে জানা যায় – ঈশ্বর, জীব, প্রকৃতি, কাল ও কর্ম ।
গীতাতে অর্জুনের ২০টি নাম আর কৃষ্ণের ৩৩টি নামের উল্লেখ করা হয়েছে ।
গীতা হচ্ছে সমস্ত শাস্ত্রের সারতিসার এমনকি গীতায় এমন কিছু আছে যা অন্যান্য কোন শাস্ত্রে পাওয়া যায় না । যেমন – ৫ম পুরুষার্থ
মহাভারতের ভীষ্মপর্বের ২৫ থেকে ৪২ নং অধ্যায়ের এই ১৮ টি অধ্যায় হল ভগবদগীতা বা গীতোপনিষদ ।
গীতায় আছে ৭০০ শ্লোকের মধ্যে ধৃতরাষ্ট্র বলেন ১টি শ্লোক, সঞ্জয় বলেন ৪০টি শ্লোক, অর্জুন বলেন ৮৫টি শ্লোক, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন ৫৭৪টি শ্লোক ।
গীতার ১৮টি অধ্যায়ের মধ্যে প্রথম ৬টি অধ্যায়কে বলে কর্ম ষটক, মাঝখানের ৬টি অধ্যায়কে বলে ভক্তি ষটক, আর বাকি ৬টি অধ্যায়কে বলে জ্ঞান ষটক ।

যদিও গীতার জ্ঞান ৫০০০ বছরেরও আগে বলেছিল কিন্তু ভগবান চতুর্থ অধ্যায় বলেছেন এই জ্ঞান তিনি এর আগেও বলেছেন, মহাভারতের শান্তিপর্বে (৩৪৮/৫২-৫২) গীতার ইতিহাস উল্লেখ আছে । তার মানে গীতা প্রথমে বলা হয় ১২,০৪,০০,০০০ বছর আগে, মানব সমাজে এই জ্ঞান প্রায় ২০,০০,০০০ বছর ধরে বর্তমান, কিন্তু কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে গেলে পুনরায় আবার তা অর্জুনকে দেন ।
গীতার মাহাত্ম্য অনেকে করে গেছেন তার মধ্যে শ্রীশঙ্করাচার্য, স্কন্দপুরাণ থেকে শ্রীল ব্যাসদেব, শ্রীবৈষ্ণবীয় তন্ত্রসারে গীতা মাহাত্ম্য আর আছে পদ্মপুরাণে দেবাদিদেব শিব কর্তৃক ১৮টি অধ্যায়ের মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছেন ।
গীতাতে মাং এবং মামেব কথাটি বেশি আছে, যোগ শব্দটি আছে ৭৮ বার, যোগী আছে ২৮ বার আর যুক্ত আছে ৪৯ বার ।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে মাত্র ৪০ মিনিটে এই গীতার জ্ঞান দেন ।
গীতার ২য় অধ্যায়কে বলা হয় গীতার সারাংশ ।
ভগবান যখন বিশ্বরূপ দেখান তখন কাল থেমে যায় ।
ভগবান শুধু যুদ্ধের আগেই গীতা বলেনি ১৮ দিন যুদ্ধের মাঝখানেও গীতা বলেছে ।
(সংক্ষিপ্ত)
Photo: গীতা তথ্য কনিকা ☛ গীতা পড়লে ৫টি জিনিষ সর্ম্পকে জানা যায় – ঈশ্বর, জীব, প্রকৃতি, কাল ও কর্ম । গীতাতে অর্জুনের ২০টি নাম আর কৃষ্ণের ৩৩টি নামের উল্লেখ করা হয়েছে । গীতা হচ্ছে সমস্ত শাস্ত্রের সারতিসার এমনকি গীতায় এমন কিছু আছে যা অন্যান্য কোন শাস্ত্রে পাওয়া যায় না । যেমন – ৫ম পুরুষার্থ মহাভারতের ভীষ্মপর্বের ২৫ থেকে ৪২ নং অধ্যায়ের এই ১৮ টি অধ্যায় হল ভগবদগীতা বা গীতোপনিষদ । গীতায় আছে ৭০০ শ্লোকের মধ্যে ধৃতরাষ্ট্র বলেন ১টি শ্লোক, সঞ্জয় বলেন ৪০টি শ্লোক, অর্জুন বলেন ৮৫টি শ্লোক, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন ৫৭৪টি শ্লোক । গীতার ১৮টি অধ্যায়ের মধ্যে প্রথম ৬টি অধ্যায়কে বলে কর্ম ষটক, মাঝখানের ৬টি অধ্যায়কে বলে ভক্তি ষটক, আর বাকি ৬টি অধ্যায়কে বলে জ্ঞান ষটক । ☛ যদিও গীতার জ্ঞান ৫০০০ বছরেরও আগে বলেছিল কিন্তু ভগবান চতুর্থ অধ্যায় বলেছেন এই জ্ঞান তিনি এর আগেও বলেছেন, মহাভারতের শান্তিপর্বে (৩৪৮/৫২-৫২) গীতার ইতিহাস উল্লেখ আছে । তার মানে গীতা প্রথমে বলা হয় ১২,০৪,০০,০০০ বছর আগে, মানব সমাজে এই জ্ঞান প্রায় ২০,০০,০০০ বছর ধরে বর্তমান, কিন্তু কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে গেলে পুনরায় আবার তা অর্জুনকে দেন । গীতার মাহাত্ম্য অনেকে করে গেছেন তার মধ্যে শ্রীশঙ্করাচার্য, স্কন্দপুরাণ থেকে শ্রীল ব্যাসদেব, শ্রীবৈষ্ণবীয় তন্ত্রসারে গীতা মাহাত্ম্য আর আছে পদ্মপুরাণে দেবাদিদেব শিব কর্তৃক ১৮টি অধ্যায়ের মাহাত্ম্য বর্ণনা করেছেন । গীতাতে মাং এবং মামেব কথাটি বেশি আছে, যোগ শব্দটি আছে ৭৮ বার, যোগী আছে ২৮ বার আর যুক্ত আছে ৪৯ বার । ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে মাত্র ৪০ মিনিটে এই গীতার জ্ঞান দেন । গীতার ২য় অধ্যায়কে বলা হয় গীতার সারাংশ । ভগবান যখন বিশ্বরূপ দেখান তখন কাল থেমে যায় । ভগবান শুধু যুদ্ধের আগেই গীতা বলেনি ১৮ দিন যুদ্ধের মাঝখানেও গীতা বলেছে । (সংক্ষিপ্ত)

Thursday, August 14, 2014

দ্রৌপদীর পাঁচজন স্বামী হওয়া সত্ত্বে ও তিনি সতী বলে বিখ্যাত। অথচ এ সমাজে কোন মেয়ের পাঁচটা স্বামী হলে তাকে অসতী বলা হবে কেন ?

দ্রৌপদীর পাঁচজন স্বামী হওয়া সত্ত্বে ও তিনি সতী বলে বিখ্যাত। অথচ এ সমাজে কোন মেয়ের পাঁচটা স্বামী হলে তাকে অসতী বলা হবে কেন ?

ব্যাখ্যা করার আগে একটি বিষয় বলে নেই,--দ্রোপদী বাসুদেব কৃষ্ণকে প্রশ্ন করেছিলেন, আপনি কি বহুপতিকে সমর্থন করছেন? তখন দৃঢ় কণ্ঠে বাসুদেব কৃষ্ণ বলেছিলেন, না। এটিকে ধর্মের নাম দিয়ে আমি সমগ্র স্ত্রীলোকের হৃদয়ে দুঃখ দিতে পারি না। এ অধর্ম, আর এ অধর্মই থাকবে। কিন্তু তোমার হৃদয়ের করুনা তোমাকে দিয়ে এই নির্ণয় করিয়েছে। করুনা তো ধর্মের আঁধার। আর এই বিষয়টি তোমার জন্য, কেবল তোমার জন্য পাপ নয়।
দ্রৌপদী এ সমাজের মেয়েদের মতো কোনও সাধারণ মেয়ে ছিলেন না। দ্রুপদ রাজার যজ্ঞের অগ্নি থেকে তাঁর জন্ম হয়েছিল। পূর্বজীবনে তিনি এক ঋষির কন্যা ছিলেন। অতি কঠোর তপস্যা করে তিনি শ্রী শিব ঠাকুরের প্রীতি সাধন করেছিলেন। তখন প্রসন্ন হয়ে শিব ঠাকুর তাঁকে বর দিতে চাইলে তিনি করজোড়ে শিব ঠাকুরের কাছে পতি লাভের বাসনা ব্যাক্ত করেন। “হে মহাদেব, যদি প্রসন্ন হয়ে থাকেন, তবে যাতে আমি সর্বগুণ সম্পন্ন পতি লাভে চরিতার্থ হতে পারি, এরূপ বর প্রদান করুন।' এই কথা পাঁচবার উচ্চারণ করেন এবং প্রতিবারইশিব ঠাকুর ‘তথাস্তু’ বলেছিলেন। তারপর শিব বলেন,“হে কন্যা,তুমি পাঁচবারই পতি বাসনা করেছ, তাই পরজন্মে রাজকন্যা রূপে জন্ম নিয়ে দেব গুনসম্পন্ন পঞ্চপতি লাভ করবে।” তারপর পরজন্মে সেই ঋষিকন্যা মহর্ষি উপযাজ কৃত যজ্ঞ থেকে উত্থিতা হন। দ্রুপদ রাজার কন্যারূপে তিনি দ্রৌপদী নামে আখ্যাতা হন। তারপর তাঁর পঞ্চপতি হওয়ার ঘটনাটিও ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিগণ সমর্থন করেছেন।

Wednesday, August 13, 2014

মৃতদেহ সৎকার



সনাতন ধর্মে মৃতদেহ পোড়াবার তিনটি কারন আছে।

আধ্যাত্মিক কারণঃ আমরা সনাতন ধর্মের অনুসারিরা পুনর্জন্মে বিশ্বাসী। এই ত্রিতাপদগ্ধ সংসারে পুনরায় জন্মগ্রহন করে মানুষ দুঃখজ্বালা ভোগ করুক এটা কেউ চাই না। যে দেহে তিনি এতদিন বাস করেছেন, তাকে সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছেন, পৃথিবীর যাবতীয় সুখের স্বাদ তাকে দিয়েছেন সে দেহের প্রতি আকর্ষণ ও মায়া থাকা স্বাভাবিক। দেহের প্রতি আকর্ষণে পুনঃ দেহ ধারনে তার আকাঙ্ক্ষা জাগতে পারে, ঐ আকাঙ্ক্ষা দূর করার উদ্দেশেই আকর্ষণের বস্তু দেহটিকে পোড়ানো হয়।

সামাজিক কারণঃ আর্য ঋষিদের ভবিষ্যৎ চিন্তা এতে প্রতিফলিত হয়েছে। মানুষ সৃষ্টি হবে এবং এমন একদিন আসতে পারে যখন স্থানাভাব দেখা দেবে। মানুষের দেহ না পুড়িয়ে মাটিতে পুঁতে রেখে দিলে ক্রমশ মাটিতে রাখার জায়গার অভাব দেখা দিতে পারে। এই কারনেই দেহ পোড়াবার বাবস্থা।

বৈজ্ঞানিক কারণঃ মানুষ বিভিন্ন কারনে মৃত্যুবরণ করে। এর মধ্য রোগে মৃত্যুই সর্বাধিক। এই সকল মৃতদেহে পচন ধরলে পরিবেশে বিভিন্ন রোগ জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। এসব চিন্তা থেকেই আর্য ঋষিগণ শব পোড়াবার বিধি দিয়েছে।

মুখাগ্নি করার কারণঃ
আমরা সনাতন ধর্মের অনুসারি বিশ্বাস করি যে, মানুষ মৃত্যুর পর স্বর্গবাসী হয় অথ্যাৎ দেবলোকে যায়। কিন্তু, তিনি স্বর্গে বা দেবলোকে যাবেন কিভাবে? বৈদিক নিয়ম অনুসারে দেবলোকে বা স্বর্গলোকে পাঠাতে হলে দেবতাদের পুরোহিত অগ্নিতে আহুতি দিতে হয়। অগ্নিদেবই সে অর্চনা বা আহুতি দেবলোকে নিয়ে যান। তাই যিনি মৃত্যুবরণ করেছেন তার প্রাণবায়ু অগ্নিদেবকে আহুতি না দিলে তিনি কি করে স্বর্গবাসী হবেন? প্রানবায়ু মুখ দিয়ে বের হয় বলে মুখে অগ্নি সংযোগ করে মন্ত্র পাঠ করতে হয়-

“ওঁ কৃত্বা তু দুষ্কৃতং কর্মং জানতা বাপ্য জানতা ।
মৃত্যুকাল বশং প্রাপ্য নরং পঞ্চত্বমাগতম্
ধর্মাধর্ম সমাযুক্তং লোভ মোহ সমাবৃতম্
দহেয়ং সর্বগাত্রানি দিব্যান্ লোকান্ স গচ্ছতু”

অনুবাদঃ তিনি জেনে বা না জেনে অনেক দুষ্কর্ম করে থাকতে পারেন। কালবশে মানুষ মৃত্যুবরণ করে থাকে। এ দেহ ধর্ম, অধর্ম, লোভ, মোহ প্রভৃতি দ্বারা আচ্ছাদিত ছিল। হে অগ্নিদেব, আপনি তার সকল দেহ দগ্ধ করে দিব্যলোকে নিয়ে যান।