Saturday, January 18, 2014
বিবাহিত হিন্দু মেয়েরা কেন সিঁদুর পরে ???
শাঁখা সিঁদুর আমাদের
হিন্দু বিবাহিত
নারীরা পরে আসছে অনেক
আগে থেকে ।।
তবে বর্তমানে এগুলা না পরা অনেকটা আধুনিকতার
স্বারুপ
হয়ে দারাচ্ছে কারো কারো কাছে তাই
আসুন আজ
আমরা দেখে নেই
শাঁখা সিঁদুর পরার
কারন আর কেন
এটা পরা উচিত...........
আধ্যাত্মিক কারণ :
শাঁখার সাদা রং-
সত্ত্ব, সিঁদুরের লাল
রং -রজঃ এবং লোহার
কাল রং- তম গুণের
প্রতীক।
সংসারী লোকেরা তিনটি গুণের
অধীন
হয়ে সংসারধর্ম পালন
করে। সামাজিক
কারণ :
তিনটি জিনিস
পরিধান করলে প্রথম
দৃষ্টিতেই
জানিয়ে দেয় ঐ
রমণী বিবাহিত,তার
স্বামী আছে অর্থাৎ
জীবনে চলার
পথে সে একা নয়।
সে কারণেই অন্য
পুরুষের লোভাতুর,
লোলুপ দৃষ্টি প্রতিহত
হয়। স্বামীর মঙ্গল
চিহ্ন তো অবশ্যই।
সৌন্দর্যগত
কারণঃএক জন
মহিলা সিদুর
পরলে নিশ্চিত
ভাবে তাঁকে আরও
বেশি সুন্দর দেখায়।এ
কারনে এখন দেখা যায়
অনেক অহিন্দু
রমণীও শাঁখা সিদুর
পরেন। লক্ষ্য করবেন
- * সিঁদুর দেয়ার সময়
মায়েরা নিচের
দিকে নয়, ঊর্ধ্বায়ণ
করে। কেন? সিঁদুর
ঊর্ধ্বায়ণের
মাধ্যমে রমণীগণ
নিয়ত তার স্বামীর
আয়ু বৃদ্ধির
প্রার্থনা করে। *শুভ
বিজয়াতে বা বিভিন্ন
পূজা পার্বণে মায়ের
দেবী দুর্গাকে সিঁদুর
ছোঁয়ান
বা একে অন্যে সিঁদুর
পড়ান। কেন?
দুর্গা দেবীর
কাছে প্রার্থনা করেন
সিঁথির সিঁদুর যেন
অক্ষয় থাকে।
একে অন্যকে পড়ান
সে বাসনাতেই।
নমস্কার ও প্রনাম সম্পর্কে ৫ টি তথ্য
1 নমস্কার ছোট-বড় সকলকে জানানো যায়। যেমন একজন বয়স্ক মানুষ তার নাতী/ নাতনীকে এভাবে সম্বোধন করতে পারেন,''নমস্কার দাদু--কেমন আছ?''
নমস্কার জানাতে কোন লজ্জা নেই। বরং সম্মানের বিষয়।
2 বয়সে বড়দের প্রনাম করুন। কিন্তু ছোট কাউকে প্রনাম করতে নেই। এমনকি কাকা,
মাসি, পিসি ছোট হলে ও নয়।
3 বিগ্রহকে কখনো একহাতে প্রনাম করতে নেই, সর্বদা দুইহাতে বুকে ও মাথায় হাত ঠেকিয়ে করতে হবে।
4 মন্দিরের ভিতরে/ বিগ্রহের সামনে কখনো কাউকে প্রনাম করতে নেই।
5 ঘুমন্ত বা শায়িত ব্যক্তি কে প্রনাম করা উচিত না। আপনাদের মূল্যব্যান মতামত আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে অনুপ্রেরণা।
ভালো লাগলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার
করতে পারেন। নমস্কার সবাইকে।
আমেরিকান সনাতন ধর্মাবলম্বী
ইহুদিদের টপকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এখন আমেরিকায় শিক্ষায় , মেধায় , আর্থিক ও সামাজিক সহ সকল সূচকে উচ্চতর অবস্থানে ( এক নম্বরে ) আছে । পূর্বে ইহুদিদের দখলে ছিল এই স্থান, খ্রিস্টানদের অবস্থান অনেক পেছনে । আর মুসলমিদের অবস্থান সবার নীচে ! আমেরিকান সরকারের জরিপ অনুযায়ী এ তথ্য জানা গেছে ।
এ জরিপ অনুয়ায়ী কিছু তথ্য হল:
* ৩৬ % নাসা বিজ্ঞানী সনাতন ধর্মাবলম্বী।
* ৩৮ % আমেরিকার ডাক্তার সনাতন ধর্মাবলম্বী।
* ৩৪ %মাইক্রোসফটের কর্মকর্তা সনাতন ধর্মাবলম্বী।
* ২৮ % আইবিএম কর্মকর্তা সনাতন ধর্মাবলম্বী।
* ১৭ % ইন্টেল কর্মকর্তা সনাতন ধর্মাবলম্বী।
* ৪৮% আমেরিকান সনাতন ধর্মাবলম্বীরই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি আছে, বিবাহ বিচ্ছেদের হারও এদের মধ্যে কম।
* ৪৮% আমেরিকান সনাতন ধর্মাবলম্বীর পারিবারিক আয় ১০০,০০০ মার্কিন ডলার বা তার বেশি। ৭০% অন্তত ৭৫,০০০ মার্কিন ডলার আয় করে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মসম্প্রদায়গুলির মধ্যে সর্বোচ্চ ।
ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট-এর রিপোর্ট অনুযায়ী সেদেশের মোট সনাতন ধর্মাবলম্বীর ২.৪ মিলিয়ন; যা মার্কিন জনসংখ্যার প্রায় ০.৭%।
সনাতন ধর্মের বিভিন্ন ধারণা―যেমন কর্মবাদ, পুনর্জন্মবাদ ও যোগসাধনা―এখন মূলধারার মার্কিন জনসাধারণের কাছে সুপরিচিত। ২৪% আমেরিকান সনাতন ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মতবাদ পুনর্জন্মবাদে বিশ্বাসী ।ABHIJIT DEY
জাতিভেদ প্রথা(Caste System)
আসুন আগে দেখে নেই গীতায় এ সম্পর্কে কি বলা হয়েছে ? ১৮/৪১
“হে পরন্তপ ,স্বভাবজাত গুণের জন্যই ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়,বৈশ্য,শূদ্র,এই চার জাতির কর্ম সমূহ বিভক্ত হয়েছে ।”
ব্রাহ্মণের কি কাজ বা করনীয় ? ...১৮/৪২
‘শম, দম ,তপস্যা,ক্ষমা,ক্ষান্তি,সরলতা জ্ঞান, বিজ্ঞান ও আস্তিক্য – এই ,কয়েকটি, ব্রাহ্মণদের স্বভাবজাত কর্ম ।’
অর্থাৎ এগুলো না থাকলে কাউকে ব্রাহ্মণ বলা যাবে না ।
ক্ষত্রিয়ের কী করণীয় ?......১৮/৪৩
“শৌর্য,তেজ, ধৃতি,দক্ষতা,অপরাদন্মুখতা, দানশীলতা ও শাসন ক্ষমতা – এইগুলি ক্ষত্রিয়ের স্বভাবজাত কর্ম ।”
শূদ্রের কী করণীয়?....১৮/৪৪
“কৃষি,গোরক্ষা,ওবাণিজ্য – এই কয়েকটি বৈশ্যের স্বাভাবিক কর্ম ।
পরিচর্যা শূদ্রের স্বভাবজাত কর্ম ।
জন্ম সূত্রে কেউ ব্রাহ্মণ বা শূদ্র হতে পারে না । ভগবানের সেবাই তার পরিচয় ।
হিন্দু ধর্মে বৈদিক বিবাহ রীতির ধাপসমূহের সংকলন ধাপসমূহঃ
1পাটিপত্রঃপাটিপত্র বাঙালি হিন্দু বিবাহের প্রথম আচার। এই আচার লগ্নপত্র বা মঙ্গলাচরণ নামেও পরিচিত। ঘটকের মাধ্যমে সম্বন্ধ করে বিবাহ স্থির হলে নগদ বা গহনাপত্রে যৌতুক ও অন্যান্য দেনাপাওনা চূড়ান্তভাবে স্থির করার জন্য যে অনুষ্ঠান হয়, তাকেই পাটিপত্র বলে। এই আচারের মাধ্যমেই বিবাহের অন্যান্য আচারের সূচনা ঘটে।
2পানখিলঃপানখিল বাঙালি হিন্দু বিবাহের দ্বিতীয় আচার। এটি পাটিপত্রের ঠিক পরেই পালিত হয়। পানখিলের অর্থ পান পাতায় আনুষ্ঠানিকভাবে খিল দেওয়া বা খড়কে বেঁধানো। এই আচারটি প্রথমে বরের বাড়িতে এবং পরে কনের বাড়িতে অনুষ্ঠিত হয়। পানখিল আচারে বাড়ির মেয়েরা এবং প্রতিবেশিনীরা ‘বিয়ের গান’ গেয়ে থাকেন। এই গানের বিষয়বস্তু হল রাম ও সীতার বিবাহ।
3দধি মঙ্গল: বিবাহের দিন বর ও কন্যার উপবাস। তবে উপবাস নির্জলা নয়। জল মিষ্টি খাওয়ার বিধান আছে। তাই সারাদিনের জন্য সূর্য্যোদয়ের আগে বর ও কন্যাকে চিড়ে ও দৈ খাওয়ানো হয়।
4গায়ে হলুদ: সংস্কৃত ভাষায় এই রীতিকে বলা হয় গাত্রহরিদ্রা। হিন্দু ধর্মে কয়েকটি জিনিসকে শুভ বলা হয়। যেমন শঙ্খধ্বনি, হলুদ ইত্যাদি। প্রথমে বরকে ও নিতবরকে সারা গায়ে হলুদ মাখানো হয়। পরে সেই হলুদ কন্যার বাড়ী পাঠানো হয়। কন্যাকে সেই হলুদ মাখানো হয়।
5শঙ্খ কঙ্কন: কন্যাকে শাখা পরানো হয়। এরপর বিকালে বিবাহের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়
6বর বরণ: বর বিবাহ করতে এলে তাকে স্বাগত জানান কন্যাপক্ষ। সাধাবনত: কন্যার মা তার জামাতাকে একটি থালায় প্রদীপ, ধান দুর্ব্ব ও অন্যান্য কিছু বরণ সামগ্রী নিয়ে বরণ করেন। এরপর বরকে বাড়ীর ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয় ও দুধ এবং মিষ্টি খাওয়ানো হয় ।
7সাত পাক: বিবাহের মন্ডপে প্রথমে বরকে আনা হয়। এরপর কন্যাকে পিঁড়িতে বসিয়ে আনা হয়। সাধারণত: কন্যার জামাইবাবুরা পিঁড়ি ধরে থাকেন। কন্যা পান পাতা দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে রাখেন। কন্যাকে পিঁড়িতে করে বরের চারপাশে সাতপাক ঘোরানো হয়।
8শুভদৃষ্টি: বিবাহের মন্ডপে জনসমক্ষে বর ও কন্যা একে অপরের দিকে চেয়ে দেখন।
9মালা বদল: কন্যা ও বর মালাবদল করেন। এই রীতির অর্থ হচ্ছে দুজন একে অন্যকে জীবনসঙ্গী হিসাবে মেনে নিলেন। মুসলমান মতে একই ভাবে কন্যাকে বলতে হয় "কবুল"। আবার ঠিক এই রকমই খৃষ্টান মতে চার্চের ফাদারের সামনে বর ও কন্যা বিবাহে সন্মতি জানান।
10সম্প্রদান: কন্যার পিতা কন্যাকে জামাতার হাতে সম্প্রদান করেন বেদমন্ত্রে। বরও জানান যে তিনি কন্যার ভরন পোষনের দ্বায়িত্ব নিলেন। বিবাহের মন্ত্র হল যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয়ং মম।
11অঞ্জলি: কন্যা ও বর খৈ অগ্নাহুতি দেন। প্রচলিত বাংলায় একে বলে খৈ পোড়া। বৈদিক যুগে মানুষ নানা ধরনের শক্তির উপাসনা করতেন। অগ্নিও তাদের মধ্যে অন্যতম।
12সিঁদুর দান: বিবাহের শেষ রীতি হল বর কন্যার কপালে সিঁদুর লেপন করেন। বাঙালি হিন্দু নারীরা স্বামীর মঙ্গল কামনায় সিঁদুর পরেন।
জাতিভেদে ও অঞ্চলভেদে এই রীতি কিছু পরিবর্তিত হয়। তবে জানাবেন।
ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। নমস্কার সবাইকে।
আর্য আক্রমণ তত্ত্ব: নির্লজ্জ এক মিথ্যাচারের গল্প
ছোটবেলা থেকেই আমরা কল্পকাহিনী শুনতে অভ্যস্ত। এগুলো আমাদের পাঠ্য পুস্তকেও পড়ানো হয়। যেমন আর্যরা ছিল বহিরাগত। তারা ইউরোপ থেকে এসে ভারত দখল করে। বিজয়ী আর্যরা পরাভূত প্রাগার্য গোষ্ঠী ও কৌমের মানুষদের দাস, দস্যু, রাক্ষস বা অসুর বলে উল্লেখ করেছে আর নিজেদের মনে করেছে উন্নততর মানবপ্রজাতির অংশ। এই আর্যদের ধর্মই বৈদিক ধর্ম যা কালক্রমে হিন্দু ধর্ম নামে পরিচিতি পায়। হিন্দু সমাজের প্রচলিত বর্ণপ্রথায় শুদ্ররাই হচ্ছে এই অনার্যদের বংশধর।
গত দেড়শ বছর ধরে এই ‘আর্য আক্রমণ তত্ত্ব’ বা Aryan Invasion Theory হিন্দু ধর্মের বিরুদ্ধে হিন্দুবিরোধীরা ব্যবহার করছে।
চরম হিন্দুবিদ্বেষী দৈনিক আমার দেশে কয়েক বছর আগে লেখা হয় হিন্দু ধর্ম বর্বর আর্যদের আমদানি করা ধর্ম।
দক্ষিণ ভারত আর উত্তর শ্রীলংকার তামিলরা নিজেদের দ্রাবিড় বলে আখ্যা দিয়ে তারা উত্তর ভারতের তথাকথিত আর্য হিন্দুদের ঘৃণা করতে শিখে।
হিন্দু পণ্ডিতরা যেমন স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী , স্বামী বিবেকানন্দ শুরু থেকেই এই তত্ত্বের বিরোধিতা করেছেন।
আমরা কয়েকটি পর্বে এই আর্য আক্রমণ তত্ত্বের মিথ্যাচার উন্মোচন করব।
১। খ্রিস্টান মিশনারিদের চক্রান্তঃ
এই তত্ত্ব সম্প্রসারণের পিছনে লর্ড মেকলে আর জার্মান দার্শনিক মাক্সমুলারের অবদান সবথেকে বেশি। এরা প্রত্যেকে খ্রিস্টধর্ম প্রচারের জন্য এই কাজটি করেন।
এই মাক্সমুলার প্রথম জীবনে ছিলেন একজন উদ্বাস্তু। তার আত্মজীবনীতেই রয়েছে
…Had not a penny left, and that in spite of every effort to make a little money, I should have had to return to Germany.(ref –the life and letters of Maxmuller, vol.1, p.61, London edn)
তাই ব্রিটিশদের ধর্মপ্রচারের কাজে তাকে যোগদান করতে হয়। তিনি তার মেধাকে ব্রিটিশদের হাতে বেঁচে দিলেন।
I am to hand over to the company, ready for the press, fifty sheets each year-the same I had promised to samter in Germany; for this I have asked 200 pounds a year, 4 pounds a sheet.(ref. the life and letters of Maxmuller, vol.1, p.60-61, London edn.)
কর্নেল জোসেফ বোডেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাবাহিনীতে বোম্বেতে চাকরি করতেন। তিনি ছিলেন একজন খ্রিস্টান উগ্রবাদী। হিন্দুদের খ্রিস্টান বানাতে তিনি মিশনারিদের সহায়তা করতেন। ১৮০৭ সালে অবসর গ্রহণের পর তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে ২৫০০০ পাউন্ড অনুদান করেন সেখানে সংস্কৃত ভাষার উপর চেয়ার প্রতিষ্ঠা করতে। বিশ্ববিদ্যালয় তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে এর নাম করে বোডেন চেয়ার। বোডেনের লক্ষ্য ছিল বাইবেলকে সংস্কৃত ভাষায় অনুবাদ করে এর মাধ্যমে হিন্দুদের খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত করার।
এছাড়া মিশনারিরা হিন্দুধর্মকে একটি বহুশ্বরবাদী ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। কিন্তু হিন্দুদের একেশ্বরবাদী চেতনার উৎসই হল বেদ। তাই তাদের লক্ষ্য ছিল বেদকে আক্রমণ করা। এর জন্য মাক্সমুলারের মত ধূর্ত লোকদের দরকার ছিল আরও অনেক বেশী যার ইংরেজি এবং সংস্কৃত ভাষার উপর দখল ছিল অতি জঘন্য। তার কাজ ছিল হিন্দু শাস্ত্রগুলোর অপব্যাখা করা।
লর্ড মেকলে যাকে ইংরেজি ভাষা শিক্ষা প্রবর্তনের জন্য আমাদের বুদ্ধিজীবীরা পূজা করেন তিনি জন্ম নেন এক ডানপন্থী খ্রিস্টান পরিবারে। ইংরেজি শিক্ষা এবং ইউরোপীয় ভাষা প্রচারের প্রধান লক্ষ্যই ছিল খ্রিস্টধর্ম প্রচার।
১৮৩৫ এর ফেব্রুয়ারিতে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থায় ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেন তিনি।
১৮৩৬ সালের ১২ অক্টোবর তিনি তার পিতাকে চিঠিতে লিখেন, “ our English schools are flourishing wonderfully. We find it difficult – indeed, in some places impossible – to provide instructions for all who want it. At the single town of hoogle fourteen hundred boys are learning English. The effect of this education on the hindoos is prodigious. No hindoo, who has received an English education, ever remains sincerely attached to his religion. Some continue to profess it as a matter of policy; but many profess themselves pure deists, and some embrace Christianity. It is my firm belief that if, our plans of education are followed up, there will not be a single idolater among the respectable classes in Bengal thirty years hence. And this will be affected without any efforts to proselytize; without the smallest interference with religious liberty; merely by the natural operation of knowledge and reflection. I heartily rejoice in the prospects. Ref. the life and letters of Lord Macaulay, pp. 329-330 ”
লর্ড মেকলে আর মাক্সমুলারের প্রথম সাক্ষাৎ হয় ১৮৫১ সালে লন্ডনে। পরবর্তী সাক্ষাৎ হয় ১৮৫৫ সালের ডিসেম্বরে। তাদের সেই সাক্ষাৎকারে মাক্সমুলার ভাষাকে ব্যবহারের কথা জানান। তিনি লিখেন।
“…I made acquaintance this time in London with Macaulay, and had along conversation with him on the teaching necessary for the young men who are sent out to India. He is very clear headed, and extraordinarily eloquent…I went back to oxford a sadder, and, I hope, a wiser man. Ref. –the life and letters of Maxmuller, vol.1, p.162, London edn”
মাক্সমুলার ক্রমাগত সংস্কৃত শাস্ত্রের অপব্যাখা করতে থাকেন। এই বিষয়ে স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী তার সত্য প্রকাশ বইয়ের ২৭৮ পৃষ্ঠাতে লেখেন
“the impression that the Germans are the best Sanskrit scholars, and that no one has read so much of Sanskrit as Prof Maxmuller, is altogether unfounded exposed Maxmuller. Yes, in a land where lofty trees never grow, even recinus communis or the castor oil plant may be called as oak…. I came to learn from a letter of a principal of some German university, that even men learned enough to interpret a Sanskrit letter are rare in Germany. I have also learnt from the study of Maxmuller’s history of Sanskrit literature and his comments on some mantras of the Veda, that prof. Maxmuller has been able to scribble out something by the help of the so-called tikas or paraphrases of the Vedas current in India”
এই মাক্সমুলারই বেদের বিভিন্ন মন্ত্রের অপব্যাখা দিয়ে আর্য আক্রমণ তত্ত্বের প্রবর্তন করেন।
২। আর্য দ্রাবিড় বিভক্তিঃ
ঋগবেদে কোথাও এই কথা নেই যে আর্যরা আক্রমণ করেছে বা বেদের দ্রষ্টা ঋষিরা ভারতের বাইরে থেকে এসেছেন। তারপরও হিন্দুবিরোধীরা অপপ্রচার চালায় ঋগবেদের বিরুদ্ধে।
তারা বলে অঙ্গিরা বংশের ঋষিরা ইন্দ্রের আহ্বান করেছেন দস্যু এবং পানিদের দমন করতে এবং এটাই বুঝায় যে আর্য সেনাবাহিনী স্থানীয় ভূমিপুত্র দ্রাবিড়দের হত্যা করেছে।
দ্রাবিড় শব্দের মানে কি?
এর সংস্কৃত মূল দ্রব। এর অর্থ তরল জাতীয় বা জলীয়। তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল তামিলদের সঙ্গম সাহিত্যে দ্রাবিড় বলতে কোন শব্দ নাই।
তামিলদের সঙ্গম সাহিত্য ঐ অঞ্চলের জীবন, সময়, ঘটনাপ্রবাহ এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সুনির্দিষ্ট ঘটনাপ্রবাহ ইঙ্গিত করে। এটা তামিলদের ব্যাকরণেরও বিবর্তন নির্দেশ করে। এর সময়সীমা খ্রিস্টের জন্মের ২০০ বছর আগে থেকে খ্রিস্টের জন্মের ৬০০ বছর পরে পর্যন্ত।
তাহলে আর্য বলে যদি কোন জাতি বাইরে থেকে এসে দ্রাবিড়দের হত্যা করে তাদের দক্ষিণ ভারতের দিকে অভিবাসী হতে বাধ্য করে তাহলে তামিলদের এই প্রাচীন সাহিত্যে কেন এই ঘটনার উল্লেখ নেই?
নবম শতাব্দীর দিকের তামিল সাহিত্যে দ্রাবিড় শব্দটি প্রথম পাওয়া যায়। সেন্থান দিবাকরম নামে একটি শব্দভাণ্ডারে দ্রাবিড় নামটি পাওয়া যায়। এটি ব্যবহৃত হয়েছিল তামিল বুঝাতে।
এটি পরিষ্কার যে দ্রাবিড়দের নিয়ে গল্পটি একটি নির্লজ্জ মিথ্যাচার। উনবিংশ শতাব্দীতে রবার্ট ক্যাডঅয়েল নামক এক খ্রিস্টান ইভানজেলিস্ট প্রথম এই দ্রাবিড় শব্দটি ব্যবহার করেন আর্য আক্রমণ তত্ত্বে। এরপরই এটা রাজনৈতিক রূপ পায়।
৩। ঋগবেদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারঃ
দেখা যাক মহাজ্ঞানীরা ঋগবেদের কোন মন্ত্রগুলো ব্যবহার করছে আর্য আক্রমণ তত্ত্ব প্রমাণ করতে। তারা ঋগবেদের ১০/৪৮ সুক্তকে দেখায় যেখানে আছে ইন্দ্র দস্যু, বৃত্র এবং পানিদের দমন করেছেন, তাদের সম্পদ নিয়ে নিয়েছেন এবং বলেছেন যারা তাঁর অনুসারী তাঁরা ব্যর্থ হবে না। বৃত্র এবং পানি দস্যুর প্রকারভেদ।
কিন্তু ঋগবেদের ১/৩৩/১-১০ মন্ত্রগুলো পড়লে বুঝতে পারা যায় দস্যুদের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া ইন্দ্রের সম্পদ আসলে জ্ঞান। ঋগবেদের ১/৩৩/১ মন্ত্রটি শেষ হয় “gavam ketam param avarjate nah” এই কথাগুলো দিয়ে।
এর অর্থ দীপ্তিময় গাভীর সর্বোচ্চ জ্ঞান।
এই মন্ত্রটির অর্থ হচ্ছে come let us go seeking the cows to Indra, it is he that increases the thought in us, for us, he releases supreme knowledge of the luminous cows.
বেদে যারা আধ্যাত্মিক কর্ম করেন তাদের যাজ্যু বলা হয়েছে। এই উৎসর্গ যেই সত্ত্বাদের উদ্দেশে করা হত তাদের যাজত বলা হত। যাজ্যুকে তার শুভবুদ্ধির জন্য সুক্রাতু বলা হত। সুক্রাতু যখন ঐশ্বরিক বানী লাভ করতেন তাদের বলা হত বিশ্বের গায়ক।
দস্যু শব্দটি সুক্রাতু এবং যাজ্যুর ঠিক বিপরীত। একে বলা হত অযাজ্যু। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে দস্যু বিশ্বের গায়কদের ঘৃণা করে। এই জন্য একজন দস্যুকে বলা হত ব্রহ্মদ্ভিসা এবং অনাসা ( যার কথা বলার কোন মুখ নেই ) ও অমানযামানা ( যার কোন মানসিক বিবেকবোধ নাই )। বেদে বলা আছে দস্যুদের যে জ্ঞান তা ইন্দ্র কেড়ে নেন মানুষের সাহায্যে। ঋগবেদের আরেক জায়গাতে আছে পানি এমন এক ধরণের দস্যু যারা পবিত্র গাভি চুরি করে তাদের গুহাতে আটকে রাখে। ইন্দ্র মানুষের সহায়তায় তা উদ্ধার করেন।
ঋগবেদের ৬/৫১/১৪ তে ইন্দ্রের প্রতি প্রার্থনা করা হয়েছে পানিদের ধ্বংস করতে এবং পানিদের নেকড়ের সাথে তুলনা করা হয়েছে।
ঋগবেদের ৩/৩৪/৭-১০:
৭। ইন্দ্র,সাহসীদের প্রভু,যিনি সকলের শাসনকর্তা,যিনি সকল শক্তির মুল,যার শৌর্যে শক্তিশালী শৌর্যময়, এই পৃথিবীতে তার এই দান এর জন্য জ্ঞানীগন তার প্রশংসা করেন।
৮। অনন্যসাধারন,সর্বজয়ী,সকল জয়ের দাতা,আলোক এবং পানির উত্স ,স্বর্গ ও মর্তের মালিক,সেই ইন্দ্রকেই সকলে ভক্তিসহকারে বন্দনা করে।
৯। তিনি শক্তিশালী সূর্য ও অশ্ব এর মালিক(সংস্কৃত তে শক্তি এর প্রতীক হিসেবে সূর্য,অশ্ব এবং বৃষ এই তিনটি শব্দ প্রায়শই ব্যবহৃত হয়ে থাকে)।তিনি আমাদের গোসমূহ যোগান দিয়ছেন যা আমাদের দুগ্ধের যোগান দেয়।তিনিই স্বর্নময় সকল গুপ্তধনের উত্স(,তিনি দস্যুদের ধ্বংস করেন এবং আর্যদের রক্ষা করেন।
১০। তার শক্তিতেই গাছপালা বেড়ে উঠে,দিনের পর দিন আবর্তিত হয়;তিনি এই ভুখন্ড এবং বায়ুমন্ডল এর অধিকারী,তিনি অসতদের বিনাশ করেন,দাম্ভিকদের নিবৃত্ত করেন।তিনিই গাছপালা, বনজঙ্গল, আকাশ, দিনরাত্রির শৃঙ্খল রক্ষা করেন।
এখন দস্যুরা যদি মনুষ্য সন্তান হয় এবং তারা অনার্য আদিবাসী হয় তবে তাদের থেকে ইন্দ্র কি করে আকাশ এবং দিনকে মুক্ত করেন? বেদে আরও আছে ইন্দ্র দস্যুদের তাড়া করেন এবং তাদের বিতাড়িত করেন স্বর্গ এবং মর্ত্য থেকে তার বজ্রের সাহায্যে। ইন্দ্রের মহত্ত্ব বাড়তে থাকে এবং ইন্দ্রের দীপ্তি দস্যুদের পলায়নের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এরপর ইন্দ্র হারিয়ে যাওয়া সূর্যকে উদ্ধার করেন এবং সেই সূর্য যখন উদিত হয় তখন তার আলোয় গুহাগুলো আলোকিত হয় যেখানে ভালা (এক ধরণের দস্যু) পবিত্র গাভীগুলি লুকিয়ে রেখেছে।
তাহলে আমরা এমন এক চিত্র পাই যেটা সম্পূর্ণভাবে আর্য আক্রমণ তত্ত্বের বিরুদ্ধে যায়।
পরবর্তী লেখায় বেদে দস্যু তাদের বলা হয়েছে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
৪। সঙ্গম সাহিত্য থেকে প্রমাণঃ
আমরা এখন তামিলদের সাহিত্যের দিকে নজর দেই। আমরা দেখি আসলেই কি তামিলরা তথাকথিত দ্রাবিড় যারা আর্যদের হাতে নির্যাতিত হয়েছিল।
সঙ্গম সাহিত্যে পৃথিবীকে ভাগ করা হয়েছে মুল্লাই (বন), কুরিঞ্ছি (পাহাড়), মারুদাম (কৃষি ভূমি), নেইদাল (সমুদ্র সৈকত) এবং পালাই (খোলা ভূমি) এই পাঁচ ভাগে।
তল্কাপ্পাইয়াম সাহিত্যে আছে এই জায়গাগুলোর দেবতা হচ্ছে মুল্লাইঃ তিরুমাল/ বিষ্ণু। কুরিঞ্ছিঃ সেয়ন ( কুমার/মুরুগুয়া/ কার্ত্তিকেয়)। মারুদামঃ ভেন্দান/ইন্দ্র। নেইদালঃ বারুনান/ বরুণ। পালাইঃ কররাভাই/ শক্তি।
সঙ্গম সাহিত্যের আরেকটি অংশ হচ্ছে পুরানানুরু। সেখানে আছে শিব তিনটি শহরকে ধ্বংস করেছেন (ত্রিপুরা সামহারা)। সেখানে আছে শিব এক হাতে মেরু পর্বত তুলে নেন তীরধনুক হিসেবে। একটা ভয়ংকর সরীসৃপকে তীর ধনুকের ছিলা হিসেবে ব্যবহার করেন। একটা তীরের আঘাতে শহর তিনটিতে আগুন লেগে যায় এবং তা ধ্বংস হয়ে যায়। পুরানানুরু সাহিত্যে কার্তিককে বারবার দেখা যায় শিবের ছেলে হিসেবে।
এটা আমাদের অগ্নিকুমার যিনি পুরাণের কার্তিকেয়র প্রতিচ্ছবি তার সাথে শিবের সম্পর্ক স্থাপনে সহায়তা করে। আর্য আক্রমণ তত্ত্বের সমর্থকদের দেখা যায় শিবকে শুধু দ্রাবিড়দের দেবতা বলতে দেখা যায়। সত্য এই যে বেদের রুদ্র থেকে পৌরাণিক শিবের উৎপত্তি।
তৈত্তিরীয় সংহিতা বা কৃষ্ণ যজুর্বেদ এর রুদ্রম ভাগের বিভিন্ন ভাগে রুদ্র সম্পর্কে নির্দিষ্ট ধরনের বেশকিছু বৈশিষ্ঠ্য উল্লেখিত হয়েছে।আর শিব হল সেই বেশ কিছু গুলের একটি নির্দিষ্ট অংশের প্রতীক।পরবর্তীতে রুদ্রের বদলে অধিকাংশ স্থানেই শিব শব্দটির ব্যবহার শুরু হয়।তামিল গ্রন্থসমুহ যেমন পেরিয়া বা পুরানাম সমুহে শিবের যে বৈশিষ্ঠ্য দেখানো হয়েছে তা বেদের রুদ্রের সমরুপ।চিদাম্বরাম,থেবারাম এলাকাগুলোতে এখনও রুদ্রাম/চমকম পাঠ করা হয়।যদি তামিলদের শিব আর বৈদিক শিব আলাদা হত তবে তা নিশ্চয় করা হতনা।আসলে তৈত্তিরীয় সংহিতার রুদ্রাম সংস্কৃতিটাই এখনো তামিলনাড়ু, কর্ণাটকে বিদ্যমান।
৫। কেন এই আর্য আক্রমণ তত্ত্বঃ
ইন্দোইউরোপিয়ান ভাষাগুলোর পারস্পরিক মিল দেখে ধারণা করা হয় যে এই ভাষাভাষীরা সকলে একই পূর্বআবাসস্থল থেকে এসেছে। সংস্কৃতের সাথে ইউরোপিয়ান বেশ কয়েকটি ভাষার মিল দেখে কেবল ভাষাগত মিল দেখেই জার্মান ইন্ডোলোজিস্ট ম্যাক্স মুলারই প্রথম আর্য আক্রমণ তত্ত্বের সূচণা করে। এই তত্ত্ব অনুযায়ী আর্যরা রাশিয়ার দক্ষিণ অংশ থেকে মাইগ্রেট করে ভারতীয় উপমহাদেশের আদিম অধিবাসীদের আবাস তথা সিন্ধু উপত্যকায় পৌছে। ম্যাক্স মুলারের এই তত্ত্বে কেবল ভাষাগত মিলকে বিবেচনায় নিয়েই এরকম একটি তত্ত্বকে দাঁড় করানো হয়। সিন্ধু সভ্যতার কোন আর্কিওলজিকাল এভিডেন্স তখনও আবিস্কৃত হয়নি। পরবর্তীতে ১৯২০ সালের দিকে যখন হরপ্পা, মহেঞ্জোদারো ও লোথাল নগর সভ্যতা আবিস্কৃত হয় তখন তত্ত্বটির খানিকটা পরিবর্তন হয়। যাযাবর বর্বর আর্যরা ইউরোপ থেকে এসে উন্নত নগর সভ্যতায় আক্রমণ করে এবং তাদেরকে পরাজিত করে সভ্যতাগুলোকে ধ্বংস করে। মহেঞ্জোদারো খনন করতে গিয়ে মন্টিমার হুইলার একেবারে উপরের অংশে কিছু মানুষের খুলি-হাড়গোড় পেলে এ তত্ত্বটি আরো দৃঢ় হয় এবং মোটামুটি সর্বজনবিদিত তত্ত্বে রূপান্তরিত হয়। তত্ত্বটি অনুযায়ী খ্রীষ্টপূর্ব ১৫০০ সালের দিকে আর্যরা ভারতের প্রাচীন কিন্তু সভ্য অধিবাসী দ্রাবিড়দের আক্রমণ করে। এই অসভ্য-বর্বর-যাযাবর-পশুপালক জাতিই আর্য জাতি। এদের হাতেই ঋগ্বেদ রচিত হয়।
কী সহজ ইতিহাস! এবারে দেখি তাদের এ ধরণের ইতিহাস লেখার কারণগুলো কী কী।
ম্যাক্স মুলার বা অন্য যারা এই তত্ত্বের প্রবক্তা ও প্রচারক তারা সবাইই মনে করতেন বাইবেলের সৃষ্টিতত্ত্ব নির্ভুল। সুতরাং পৃথীবীর বয়স কোনক্রমেই খ্রীষ্টপূর্ব ৪০০০ অব্দের বেশী যেতে পারে না। সুতরাং খ্রীষ্টপূর্ব ১৫০০ এর বেশি তারা মোটেই ভাবতে পারেনি কারণ বাইবেল অনুযায়ী নুহের প্লাবন হয়েছে খ্রীষ্টপূর্ব ২৫০০ সালের দিকে। কেউ কেউ অবশ্য আরো নিচে নেমে এসেছেন। কারো কারো মতে খ্রীষ্টপূর্ব ১১০০-৯০০ সালও হতে পারে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে জার্মান আর্যশ্রেষ্ঠ তত্ত্ব। যেহেতু ঋগ্বেদের রচয়িতারা নিজেদেরকে আর্য বলেছেন সুতরাং ইতিহাস তৈরি হয়ে গেল।
এবার আসি এই ইতিহাসের পূনর্মূল্যায়নে।
ঋগ্বেদে আর্য শব্দটি কি একটি জাতিকে বুঝিয়েছে? ঋগ্বেদে আর্য শব্দটি গৌরব বা মর্যাদার অর্থ বহন করেছে, মোটেই কোন জাতিকে বুঝায়নি। ইরানী আবেস্তায়ও আর্য শব্দটি গৌরব ও শ্রেষ্ঠত্ববোধের পরিচায়ক। আর্য ও দ্রাবিড় যদি দুটো ভিন্ন জাতি হত তাহলে উত্তর ও দক্ষিণ ভারতের অধিবাসীদের একই দেবতা, একই ঈশ্বর, প্রায় একই ভাষা (সংস্কৃত থেকে উদ্ভুত), একই পৌরাণিক বিশ্বাস ও গল্প হতে পারত না। দ্রাবিড়িয়ান কি কোন আলাদা জাতিগোষ্ঠী? তা তো নয়। তাহলে দাড়ায়- ককেশিয়ানরা দুই ভাগে ভাগ হয়ে একদল আর্য আরেকদল দ্রাবিড়িয়ান হয়েছে। দুই মহাদেশের বিশাল অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষদের ভাষা একই পরিবারভুক্ত হওয়ায় এবং একইসাথে আবেস্তা ও ঋগ্বেদের মিল দেখে পণ্ডিতগণ অনুমান করেছিলেন যে এরা একই আদি জনগোষ্ঠী থেকে ছড়িয়ে পড়ে সভ্যতা গড়ে। তাদের অনুমান ঠিকই ছিল কিন্তু যখন তারাই এই আর্যদের যাযাবর পশুপালক বর্বর বলেন আবার ঋগ্বেদও তাদের দ্বারা রচিত বলেন তখন তাদের ইতিহাস প্রশ্নবিদ্ধ না হয়ে উতড়ে যেতে পারে না।
ঋগ্বেদ যদি তথাকথিত আর্যদের দ্বারা রচিত হয় তাহলে কেন ঋগ্বেদে কোথাও ইউরোপীয় স্থান, নদী ইত্যাদির নামও নেই? তারা যখন বলেন আর্যরা খ্রীষ্টপূর্ব ১৫০০ সালে সিন্ধু সভ্যতা আক্রমণ করে আর এদিকে আমরা ঋগ্বেদে খরস্রোতা স্বরস্বতী নদী দেখতে পাই, যে নদী খ্রীষ্টপূর্ব ৪০০০ অব্দে মরে যায় (সম্ভবত প্লেট টেকটোনিক মুভমেন্টের জন্য) তখন এ ইতিহাস যে মিথ্যা তা আর দ্বিতীয়বার ভাবতে হয় না। তাছাড়া পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের মেহরগড় প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানটি খননের পর দেখা যায় প্রায় ৯৫০০ বছর আগে নবপ্রস্তর যুগে এখানকার অধিবাসীরা যাযাবর জীবন ছেড়ে স্থিতিশীল গ্রামীণ কৃষি জীবনে চলে গিয়েছিল। খ্রীষ্টপূর্ব ৮০০ সাল পর্যন্ত সেখানে কোন বাইরের জনগোষ্ঠীর আগমণ ঘটেনি।
ঋগ্বেদ যে কোন যাযাবর জনগোষ্ঠীর রচিত হতে পারে না তা ফুটে ওঠে এর সমাজচিত্র রূপায়নে, গৃহনির্মাণের উপমা প্রয়োগে, অট্টালিকা, তন্তুবায়, ভেষজ চিকিৎসা ইত্যাদি শব্দপ্রয়োগে। চান্দ্রমাসে হিসাব করলে যে প্রতি তিন বছর একটি ১৩ মাসে বছর হতে হয় (যা কৃষিকাজ ইত্যাদির জন্য খুবই প্রয়োজনীয়), যাকে বৈদিক সমাজ মলমাস বলত (এখনো হিন্দুরা বলে) তাও বেদে উল্লেখ পা্ওয়া যায়। এরকম কয়েকশ উদাহরণ দেয়া যাবে যাতে প্রমাণিত হয় যে বেদের রচয়িতা মোটেই তথাকথিত আর্যরা হতে পারে না।
প্রত্মতাত্ত্বিকভাবে এখন জানা যাচ্ছে যে মেহেরগড়ে মৃৎশিল্প-পূর্ব যুগে এখানকার মানুষ স্থিতিশীল বসতি গড়ে এবং পশুপালন ও কৃষিকাজ শুরু করে। পরবর্তীতে কালক্রমে তারা বৃহত্তর সিন্ধু-সরস্বতী উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়ে। তাম্রযুগ ও আদি হরপ্পান পর্যায় পেরিয়ে তারা প্রায় ২৬০০ খ্রীস্টপূবাব্দ থেকে ১৯০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত এক স্থায়ী নগর সভ্যতা গড়ে তোলে যাকে হরপ্পান সভ্যতাও বলা হয়। সকলকে জানিয় দিন। নমস্কার।
লেখক- রজত দাশ গুপ্ত
Monday, January 6, 2014
বেদে কোনো বর্ণভেদ নেই
এটা ভীষণ দুর্ভাগ্যজনক যে, যে বিশ্বের হিন্দু সম্প্রদায়ে বেদ হলো সমাজের মূল ভিত্তি, সেখানে আমরা ভুলেই গেছি বেদের মূল শিক্ষাগুলো এবং নিজেদেরকে নানা ভুল-ভ্রান্তিসমূহের ধারণায় জড়িয়ে ফেলেছি যেমন, জন্মগত caste system-সহ নানারকম বৈষম্য। এরকম বিপথগামী চিন্তা-চেতনা, ধ্যান-ধারণা আমাদের সমাজকে ভীষণ ক্ষতিসাধন করেছে এবং বৈষম্যের সূত্রপাত ঘটিয়ে দিয়েছে। দলিত নামক জাতিচ্যুত ব্যক্তিদের আমরা দূরে ঠেলে দিয়েছি এবং এর ফলে আমাদের উন্নতি ও প্রগতির বিকাশ স্থবির হচ্ছে। এর একমাত্র সমাধান হচ্ছে হিন্দু সমাজের মূলে গিয়ে বেদকে জানা - যার ফলে আমরা আমাদের মধ্যে ভাঙা সম্পর্কগুলো পুনরায় স্থাপণ করতে পারব।
এই লেখায় আমরা চেষ্টা করব বেদ অনুযায়ী আমাদের caste system সম্পর্কে প্রকৃত ইতিহাস উদঘাটন করার এবং শূদ্রের আসল অর্থ খোঁজার।
১।
প্রথমত, কোনো প্রকার হিংসা বা বৈষম্যের স্থাণ নেই বেদে যেকোনো ব্যক্তি সম্পর্কে - সে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, বা শূদ্র কিনা।
২।
Caste system প্রায় নতুন। বেদে কোনো শব্দ নেই যার অর্থ বর্ণ/জাতি হতে পারে। আসলে, caste, জাতি আর বর্ণ এগুলো এক একটি এক এক অর্থ বহন করে।
Caste হলো একটি ইউরোপীয় নবধারা যার সাথে বৈদিক সংস্কৃতির কোনো সামঞ্জস্যতা নেই।
জাতি
'জাতি'র অর্থ হচ্ছে এক শ্রেণীভুক্তকরণ যার উৎস হচ্ছে জন্মে। ন্যায় সূত্র বলেছে "সমানপ্রসাভাত্মিকা জাতিহ্" অথবা তারা যাদের একইপ্রকার জন্মসূত্র যা এদেরকে একটি জাতিতে সমষ্টিবদ্ধ করে।
একটি প্রাথমিক আরো বড় শ্রেণীভুক্তকরণ ঋষিদের দ্বারা করা হয়েছে চারভাবে: উদ্ভিজ (অর্থাৎ গাছপালা), আন্ডাজ (অর্থাৎ ডিম থেকে যার উৎপত্তি যেমন পাখি এবং সরীসৃপ), পিন্ডজ (স্তন্যপায়ী), উষ্মজ (তাপমাত্রা বা পরিবেষ্টনকারী আবহাওয়ার জন্য যার জন্ম যেমন ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া ইত্যাদি)।
তেমনিভাবে নানাপ্রকার পশুসমূহ যেমন হাতি, সিংহ, খরগোশ ইত্যাদি তৈরি করে এক ভিন্ন 'জাতি'। একইভাবে সমস্ত মানবকুল তৈরি করে একটি 'জাতি'।
একটি নির্দিষ্ট জাতির থাকবে একই ধরনের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য যারা সেই জাতি থেকে আরেক জাতিতে পরিবর্তিত হতে পারবে না এবং ভিন্ন জাতির বাচ্চা প্রসব করতে পারবে না। অর্থাৎ, জাতি হচ্ছে ঈশ্বরের সৃষ্টি।
ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্রেরা কোনোভাবেই ভিন্ন জাতি নয় কারণ তাদের মধ্যে জন্ম সূত্রগত বা বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যগত কোনো পার্থক্য নেই যা তাদেরকে ভিন্ন করবে।
পরবর্তীতে 'জাতি' শব্দটি ব্যবহৃত হতে শুরু করে যেকোনো প্রকার শ্রেণীভেদকরণের জন্য। তাই সাধারণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা ভিন্ন ভিন্ন সমাজকেও ভিন্ন ভিন্ন 'জাতি' হিসেবে আখ্যা দেই। কিন্তু এ শুধু ব্যবহারের সুবিধার জন্য। আসলে আমরা মানবকুল এক জাতিরই অংশ।
বর্ণ
প্রকৃত যে শব্দ ব্যবহার করা হয়েছিল ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র বোঝাতে তা হলো 'বর্ণ' ('জাতি' নয়)।
'বর্ণ' শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে এই চারকে বোঝাতেই নয়, বরং দস্যু ও আর্যদেরকেও।
'বর্ণ' অর্থ হচ্ছে তাহাই যাহা গ্রহণ করা হয় পছন্দের দ্বারা। তাই, যেখানে 'জাতি' ঈশ্বর দ্বারা প্রদত্ত, 'বর্ণ' হচ্ছে আমাদের নিজস্ব পছন্দগত।
যারা আর্য হতে পছন্দ করে তাদের বলা হয় 'আর্য বর্ণ'। তেমনি যারা দস্যু হতে পছন্দ করে, তারা হয় 'দস্যু বর্ণ'। একইভাবে হয় ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শূদ্র।
এই কারণেই বৈদিক ধর্মকে বলা হয় 'বর্ণাশ্রম ধর্ম'। বর্ণ শব্দটি ইঙ্গিত করে যে এটির ভিত্তি হচ্ছে নিজ পছন্দকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া ও যোগ্যতা অনুসারে পরিচালিত ব্যবস্থাকে অনুমোদন দেয়া।
৩।
যারা বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকান্ডে নিয়োজিত, তারা পছন্দ করেন 'ব্রাহ্মণ বর্ণ'। যারা প্রতিরক্ষা, যুদ্ধ-বিগ্রহ পছন্দ করেন, তারা হন 'ক্ষত্রিয় বর্ণ'। যারা অর্থনীতি ও পশুপালনাদি পছন্দ করেন তারা হন 'বৈশ্য বর্ণ' এবং যারা নিয়োজিত আছেন অন্যান্য সেবামূলক কাজ-কর্মে, তারা হন 'শূদ্র বর্ণ'। এসব শুধু বোঝায় নানা ধরনের পছন্দ যেসব মানুষজন তাদের কর্মের জন্য নির্বাচন করেন এবং এর সাথে 'জাতি' বা জন্মের কোনো সম্পর্ক নেই।
৪।
পুরুষ সুক্তের অন্যান্য মন্ত্রসমূহ উদ্ধৃতি দিয়ে প্রমাণ করেছে যে, ব্রাহ্মণ এসেছে ঈশ্বরের মুখ থেকে, ক্ষত্রিয় হাত থেকে, বৈশ্য উরু থেকে এবং শূদ্র পা থেকে। সেইভাবে এইসব বর্ণসমূহ জন্মগত। কিন্তু কোনোকিছুই এর চেয়ে বেশী ভ্রান্তিজনক হতে পারে না। আসুন দেখি কেন:
(অ)
বেদ ঈশ্বরকে বর্ণনা করে আকারহীন ও অপরিবর্তনশীল হিসেবে। এমন ঈশ্বর কিভাবে বিশাল আকৃতির মানুষের রূপ ধারণ করতে পারে যদি তিনি আকারহীনই হন? (যজুর্বেদ ৪০.৮)
(আ)
যদি ইহা সত্যিই হয়, তাহলে তাহা বেদের কর্মতত্ত্বের বিরোধীতা করবে। কারণ কর্মতত্ত্ব অনুযায়ী, একজন ব্যক্তির জন্মগত পরিবার পরিবর্তিত হতে পারে তার কর্ম অনুসারে। সুতরাং একজন ব্যক্তি যে শূদ্র পরিবারে জন্ম নেয়, পরের জন্মে এক রাজার পরিবারে জন্ম নিতে পারে। কিন্তু যদি শূদ্রেরা ঈশ্বরের পা থেকে এসে থাকে, তাহলে সেই একই শূদ্র ঈশ্বরের হাত থেকে কিভাবে জন্ম নেয়?
(ই)
আত্মা হলো সময়হীন এবং কখনো জন্ম নেয় না। সুতরাং আত্মার কখনোই কোনো বর্ণ হতে পারে না। এ শুধুমাত্র যখন আত্মা জন্ম নেয় মনুষ্য হিসেবে তখনই এর সুযোগ থাকে বর্ণ বেছে নেবার। তাহলে বর্ণ দ্বারা কি বোঝানো হয় যা ঈশ্বরের একাংশ হতে আসে? যদি আত্মা ঈশ্বরের দেহ থেকে জন্ম না নিয়ে থাকে, তাহলে কি এই বোঝায় যে আত্মার দেহ তৈরি হয়েছে ঈশ্বরের দেহের অংশ থেকে? কিন্তু বেদ অনুযায়ী, এমনকি প্রকৃতিও চিরন্তন। এবং এই একই অনু-পরমানু পুনর্ব্যবহৃত হচ্ছে নানা মনুষ্যের মধ্যে। তাই কৌশলগতভাবে ঈশ্বরের দেহ থেকে জন্ম নেয়া কারো পক্ষে অসম্ভব, এমনকি আমরা যদি ধরেও নেই ঈশ্বরের দেহ আছে।
(ঈ)
উপরে উল্লেখ করা পুরুষ সুক্ত রয়েছে যজুর্বেদের ৩১তম অধ্যায়ে (এবং ঋগবেদ ও অথর্ববেদ বাদে যেগুলোতে কিছু ভিন্নতা রয়েছে। যজুর্বেদে এ হচ্ছে ৩১.১১)। প্রকৃতভাবে এর অর্থ কি তা বোঝার জন্য, আসুন দেখি এর আগের মন্ত্রের দিকে লক্ষ্য করি ৩১.১০।
এতে প্রশ্ন করা হয়েছে - কে মুখ? কে হাত? কে উরু আর কেই বা পা?
এর পরের মন্ত্র এর উত্তর দিয়েছে - ব্রাহ্মণ হলো মুখ, ক্ষত্রিয় হলো হাত, বৈশ্য হলো উরু এবং শূদ্র হলো পা।
লক্ষ্য করুন, মন্ত্রটি কিন্তু বলছে না ব্রাহ্মণ "জন্ম নেয়" মুখ থেকে...এটি বলছে ব্রাহ্মণ "হলো" মুখ।
কারণ যদি মন্ত্রটির অর্থ হতো "জন্ম নেওয়া" তাহলে এটি উত্তর দিত না আগের মন্ত্রের প্রশ্নটির "কে মুখ?"
যেমন, যদি আমি প্রশ্ন করি "দশরথ কে?" উত্তরটি যদি হয় "রাম জন্ম নেন দশরথের ঘরে" তাহলে তা হবে অর্থহীন।
প্রকৃত অর্থ হচ্ছে:
সমাজে ব্রাহ্মণ বা বুদ্ধিজীবিরা তৈরি করে মস্তিষ্ক বা মাথা বা মুখ যা চিন্তা করে এবং বলে। ক্ষত্রিয় বা রক্ষণকর্মীরা তৈরি করে হাত যা রক্ষা করে। বৈশ্য বা উৎপাদনকারীরা এবং ব্যবসায়ীরা তৈরি করে উরু যা ভার বহন করে এবং যত্ন করে (লক্ষ্য করুন উরুর হাড় অথবা উর্বাস্থি তৈরি করে রক্ত এবং এ হচ্ছে দেহের সবচেয়ে শক্ত হাড়)। অথর্ববেদে উরুর বদলে "মধ্য" শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে যার অর্থ বোঝায় পাকস্থলী এবং দেহের মধ্যের অংশ।
শূদ্র বা শ্রমিকেরা তৈরি করে পা যা কাঠামোটিকে দাঁড় করায় এবং দেহকে চলতে সক্ষম করে।
পরবর্তী মন্ত্রগুলো আলোচনা করেছে অন্যান্য দেহের অংশ সম্পর্কে যেমন - মন, চোখ ইত্যাদি। পুরুষ সুক্ত বর্ণনা করেছে সৃষ্টির সূত্রপাত এবং তার স্থায়ী থাকা সম্পর্কে যার মধ্যে অন্তর্গত মানব সমাজ এবং বর্ণনা করেছে অর্থপূর্ণ সমাজের উপাদানসমূহকে।
তাই এ ভীষণ করুণ অবস্থা যে এমন সুন্দর সমাজ সম্পর্কে রূপক বর্ণনা এবং সৃষ্টি সম্পর্কিত বর্ণনা বিকৃত হয়েছে যা সম্পূর্ণভাবে বৈদিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে।
এমনকি ব্রহ্ম গ্রন্থগুলো, মনুস্মৃতি, মহাভারত, রামায়ণ এবং ভগবদগীতা বলে নাই কোনোকিছুই যার কাছাকাছি উপপ্রমেয় হতে পারে এমন অদ্ভূত যে ঈশ্বর তৈরি করেছেন ব্রাহ্মণদের তাঁর মুখ হতে মাংস ছিঁড়ে কিংবা ক্ষত্রিয়দের তাঁর হাতের মাংস থেকে বা অন্যান্যসমূহ।
৫।
তাই এটি স্বাভাবিক কেন ব্রাহ্মণরা বেদ অনুসারে সবচেয়ে বেশী সম্মান লাভ করেছে। এমনটিই হচ্ছে আজকের বর্তমান সমাজে। বুদ্ধিজীবিরা এবং অভিজ্ঞরা আমাদের সম্মান অর্জন করেন কারণ তারা তৈরি করেন দিক প্রদর্শনকারী সারা মানবতার জন্য। কিন্তু যেমনভাবে পূর্বে আলোচিত হয়েছে যে, বেদে শ্রমের মর্যাদা সমভাবে জোর দেওয়া হয়েছে এবং এই কারণেই কোনো প্রকার বৈষম্যের উপাদান নেই।
৬।
বৈদিক সংস্কৃতিতে সবাইকে ধরা হয় শূদ্র হিসেবে জন্ম। তারপর ব্যক্তির শিক্ষা-দীক্ষা দ্বারা সে পরিণত হয় ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্যতে। এই শিক্ষা-দীক্ষার পূর্ণতাকে ধরা হয় দ্বিতীয় জন্ম। একারণেই এই তিন বর্ণকে বলা হয় "দ্বিজ" বা দু'জন্মা। কিন্তু যারা রয়ে যায় অশিক্ষিত (যেকোনো কারণেই হোক) তারা সমাজ থেকে বিচ্যুত হয়। তারা চালিয়ে যায় শূদ্র হিসেবে এবং করে যায় সমাজের সেবামূলক কাজসমূহ।
৭।
এক ব্রাহ্মণের পুত্র, যদি সে তার শিক্ষা-দীক্ষা সম্পূর্ণ করতে অসমর্থ হয়, পরিণত হয় শূদ্রে। তেমনিভাবে শূদ্রের পুত্র অথবা এমনকি দস্যু, যদি সে তার শিক্ষা-দীক্ষা সম্পূর্ণ করে, তাহলে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয় কিংবা বৈশ্য হতে পারে। এ হচ্ছে নির্ভেজাল যোগ্যতা অনুযায়ী ব্যবস্থা। যেমনভাবে এখনকার সময়ে ডিগ্রী প্রদান করা হয়, যজ্ঞপবিত দেয়া হতো বৈদিক নিয়ম অনুসারে। তাছাড়া, আচরণবিধির সাথে অসম্মতি ঘটলে যজ্ঞপবিত নিয়ে নেয়া হতো বর্ণগুলোর।
৮।
বৈদিক ইতিহাসে অনেক উদাহরণ রয়েছে বর্ণ পরিবর্তনের -
(ক)
ঋষি ঐতরেয়া ছিলেন দাস বা অপরাধীর পুত্র কিন্তু তিনি পরিণত হন শীর্ষ ব্রাহ্মণদের মধ্যে একজন এবং লেখেন ঐতরেয়া ব্রহ্ম এবং ঐতরেয়াপোনিষদ। ঐতরেয়া ব্রহ্মকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে ধরা হয় ঋগবেদ বোঝার জন্য।
(খ)
ঋষি ঐলুশ জন্মেছিলেন দাসীর ঘরে যিনি ছিলেন জুয়াখোর এবং নিচু চরিত্রের লোক। কিন্তু এই ঋষি ঋগবেদের উপর গবেষণা করেন এবং কিছু বিষয় আবিষ্কার করেন। তিনি শুধুমাত্র ঋষিদের দ্বারা আমন্ত্রিতই হতেন না এমনকি আচার্য্য হিসেবেও অধিষ্ঠিত হন। (ঐতরেয়া ব্রহ্ম ২.১৯)
(গ)
সত্যকাম জাবাল ছিলেন এক পতিতার পুত্র যিনি পরে একজন ব্রাহ্মণ হন।
(ঘ)
প্রীষধ ছিলেন রাজা দক্ষের পুত্র যিনি পরে শূদ্র হন। পরবর্তীতে তিনি তপস্যা দ্বারা মোক্ষলাভ করেন প্রায়ঃশ্চিত্তের পরে। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.১.১৪)
যদি তপস্যা শূদ্রদের জন্য নিষিদ্ধ হতো যেমনভাবে উত্তর রামায়ণের নকল গল্প বলে, তাহলে প্রীষধ কিভাবে তা করল?
(ঙ)
নবগ, রাজা নেদিস্থের পুত্র পরিণত হন বৈশ্যে। তার অনেক পুত্র হয়ে যান ক্ষত্রিয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.১.১৩)
(চ)
ধৃষ্ট ছিলেন নবগের (বৈশ্য) পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন এবং তার পুত্র হন ক্ষত্রিয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.২.২)
(ছ)
তার পরবর্তী প্রজন্মে কেউ কেউ আবার ব্রাহ্মণ হন। (বিষ্ণু পুরাণ ৯.২.২৩)
(জ)
ভগবদ অনুসারে অগ্নিবেশ্য ব্রাহ্মণ হন যদিও তিনি জন্ম নেন এক রাজার ঘরে।
(ঝ)
রাথোটর জন্ম নেন ক্ষত্রিয় পরিবারে এবং পরে ব্রাহ্মণ হন বিষ্ণু পুরাণ ও ভগবদ অনুযায়ী।
(ঞ)
হরিৎ ব্রাহ্মণ হন ক্ষত্রিয়ের ঘরে জন্ম নেয়া সত্ত্বেও। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.৩.৫)
(ট)
শৌনক ব্রাহ্মণ হন যদিও ক্ষত্রিয় পরিবারে জন্ম হয়। (বিষ্ণু পুরাণ ৪.৮.১)
এমনকি বায়ু পুরাণ, বিষ্ণু পুরাণ ও হরিবংশ পুরাণ অনুযায়ী শৌনক ঋষির পুত্রেরা সকল বর্ণের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
একই ধরনের দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় গ্রীতসমদ, বিতব্য ও বৃৎসমতির মধ্যে।
(ঠ)
মাতঙ্গ ছিলেন চন্ডালের পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন।
(ড)
রাবণ জন্মেছিলেন ঋষি পুলৎস্যের ঘরে কিন্তু পরে রাক্ষস হন।
(ঢ)
প্রবৃদ্ধ ছিলেন রাজা রঘুর পুত্র কিন্তু পরে রাক্ষস হন।
(ণ)
ত্রিশঙ্কু ছিলেন একজন রাজা যিনি পরে চন্ডাল হন।
(ত)
বিশ্বামিত্রের পুত্রেরা শূদ্র হন। বিশ্বামিত্র নিজে ছিলেন ক্ষত্রিয় যিনি পরে ব্রাহ্মণ হন।
(থ)
বিদুর ছিলেন এক চাকরের পুত্র কিন্তু পরে ব্রাহ্মণ হন এবং হস্তিনাপুর রাজ্যের মন্ত্রী হন।
৯।
"শূদ্র" শব্দটি বেদে দেখা গেছে প্রায় ২০ বারের মতো। কোথাও এটি অবমাননাকরভাবে ব্যবহৃত হয়নি। কোথাও বলা হয়নি শূদ্রেরা হলো অস্পর্শযোগ্য, জন্মগতভাবে এই অবস্থাণে, বেদ শিক্ষা হতে অনুনোমোদিত, অন্যান্য বর্ণের তুলনায় নিম্ন অবস্থাণের, যজ্ঞে অনুনোমোদিত।
১০।
বেদে বলা হয়েছে শূদ্র বলতে বোঝায় কঠিন পরিশ্রমী ব্যক্তি। (তপসে শূদ্রম্ - যজুর্বেদ ৩০.৫)
একারণেই পুরুষ সুক্ত এদের বলে পুরো মানব সমাজের কাঠামো।
১১।
যেহেতু বেদ অনুযায়ী চার বর্ণসমূহ বলতে বোঝায় চার প্রকারের কর্মকান্ড যা পছন্দের উপর ভিত্তি করে, একই ব্যক্তি প্রকাশ করতে পারে চার বর্ণের বৈশিষ্ট্য চার ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে। এইভাবে সকলেই চার বর্ণের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু সারল্যতার জন্য, আমরা বলি প্রধান পেশাকে বর্ণের পরিচয় হিসেবে। এবং এই কারণে সকল মানুষের উচিত পূর্ণভাবে চার বর্ণ হবার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করা, যেমনভাবে বেদের জ্ঞান আমাদের বলে। এই হলো পুরুষ সুক্তের সারাংশ।
ঋষি বশিষ্ঠ, বিশ্বামিত্র, অঙ্গীরা, গৌতম, বামদেব ও কন্ব - এরা সকলেই চার বর্ণের বৈশিষ্ট্যের দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। তারা বৈদিক মন্ত্রের অর্থ উদ্ভাবন করেছেন, দস্যু দমন করেছেন, দৈহিক শ্রমের কর্ম করেছেন এবং নিজেদেরকে যুক্ত করেছেন সমাজ কল্যাণের জন্য সম্পদ ব্যবস্থাপনায়।
আমাদেরও উচিত এমনটিই হওয়া।
অবশেষে আমরা দেখলাম বৈদিক সমাজ সকল মানুষকে একই জাতি বা গোষ্ঠী হিসেবে গণ্য করে, শ্রমের মর্যাদা বহাল রাখে, এবং সকল মানুষের জন্য সমান সুযোগ প্রদান করে যাতে তারা নিজ নিজ বর্ণ গ্রহণ করতে পারে।
বেদে কোনো প্রকার জন্মগত বৈষম্যের উল্লেখ নেই।
আমরা যেন সকলে একযুক্ত হয়ে একটি পরিবারের ন্যায় একতাবদ্ধ হতে পারি, প্রত্যাখান করতে পারি জন্মগত সকল বৈষম্যকে এবং একে অপরকে ভাই-বোন হিসেবে সদ্ব্যবহার করতে পারি।
আমরা যেন সকল পথভ্রষ্টকারীদের ভুল পথে এগুনো ব্যাহত করতে পারি যারা বেদে বর্ণভেদ সম্পর্কে ভিত্তিহীন দাবী করে এবং দমন করি সকল দস্যু, অসুর, রাক্ষসদের।
আমরা যেন সকলে আসতে পারি বেদের আশ্রয়ে এবং একত্রে কাজ করে মানবতার বন্ধনকে আরো দৃঢ় করতে পারি এক পরিবার হিসেবে।
সুতরাং বেদ অনুযায়ী কোনো বর্ণভেদ নেই।
বাংলাদেশের পাঠ্যপুস্তকঃ ইতিহাসের সংগে প্রতারণা
বাংলাদেশি হিন্দুর ইতিহাস শিক্ষার ‘পরিবেশপরিচিতি সমাজ’ বা অন্যান্য বোর্ড বইয়ে হিন্দুদের যেভাবে উপস্থাপনা করা হয় তাতে যেকোন হিন্দু শিশু পূর্ব পুরুষের লজ্জায় লজ্জিত হয়ে জীবনের প্রথমেই বিশাল ধাক্কা খায়। আর পশ্চিম বঙ্গের বাম সরকার তো ভোট ব্যাঙ্করক্ষায় সারকুলার ই দিয়ে দিয়েছে,’Muslim rule should not attract any criticism. Destruction of temples by muslim invaders and rulers should not be mentioned’.Circular no.syl/89/1;Dated 28.04.1989).Ministry of education,west Bengal.
অগত্যা ভরসা উইকিপিডিয়া,encyclopedia তথাইন্টারনেট এবং নিরপেক্ষ বই। কিন্তু এ ব্যস্ত যুগে অতো মনোযোগী পাঠক হওয়া কঠিন। তাই কজন বাঙ্গালি হিন্দু আজ জানে যে ইংরেজ দের আগে প্রায় পুরো ভারত বর্ষ ছিল হিন্দু মারাঠাদের অধীনে। আমার এ লেখায় আমি চেষ্টা করব সব তথ্যের লিংক দিতে।লেখাটা দুই ভাগে বিভক্ত । একভাগে খুব সংক্ষেপে ইতিহাস বর্ণনা আর আরেক ভাগে হিন্দু জাতিগুলর সামরিক পরিচয় দান।
হিন্দুর সামরিক ইতিহাস বলা শুরু করতে চাই তখন থেকে যখন থেকে তা বাইরের সভ্যতার সাথে দীর্ঘ সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।তাই শক,হুন,গ্রীকদের সাথে সংঘর্ষ এ ক্ষেত্রে বাদ(শক,হুনরা আস্তে আস্তে ভারতে মিশে গিয়েছে) ।৬৩৪ সালে ইরান বিজয় এর পর ৬৩৮ সাল থেকে হযরত উমার এর নির্দেশে আরবরা বেশ কয়েক বার সিন্ধু আক্রমন করে পরাজিত হয়।
অবশেষে প্রায় আশি বছর পর ৭১৫ সালে তারা সফল হয়,কাশিমের সিন্ধু বিজয়ের মাধ্যমে মুস্লিম দের সাথে দীর্ঘ সংঘর্ষ শুরু হয় হিন্দুদের।সিন্ধুর পর একে একে আরবরা আক্রমন করে পাঞ্জাব,রাজপুতানা,গুজ্রাট।এবং যথারীতি আরবরাই পরাজিত হয়।এরা উপমহাদেশে সামরিক ভাবে মোটামুটি ব্যর্থ।তারপর প্রায় আরাইশ’ বছর কেটে গেলো।মুসলিমদের প্রতিনিধি হয়ে আসে তুর্কীরা।৯৮০ সাল থেকে আসা শুরু করে তারা।এদের হাতে হিন্দুরা হারায় আফগানিস্তান,পাঞ্জাব।
এসব যুদ্ধে পরাজয়ের চেয়ে বড় যে ঘটনা ঘটে তা হল হিন্দুদের অদ্ভুত কিছু সামরিক নিয়ম মধ্যপ্রাচ্যের মানুষরা লক্ষ্য করে।যেমন সূর্যাস্তের পর যুদ্ধ না করা,যুদ্ধে জয় এর চেয়েও fair policy এর উপর বেশি জোর দেয়া আজকাল চিন্তারও বাইরে।এ দুইটি বিষয়কে ব্যবহার করে পরপর দুটো বড় জয় পায় তুর্কীরা। ৯৮০ সালে রাতের বেলাই অতর্কিতে ঘুমন্ত আফগান হিন্দুদের হত্যা করে তুরকিরা। হিন্দুরা হারায় আফগানিস্তান ও পাঞ্জাব।এরপর আরও কিছু জায়গা আক্রমন করে তুর্কিরা পরাজিত হয়।আবার দুইশ’ বছরের বিরতি।১১৮৭ সালের দিকে এক সাবেক হিন্দু মুহাম্মাদ গৌরি(বাংলাদেশে লেখে ঘুরি) গুজ্রাট আক্রমন এর মাধ্যমে সক্রিয় হয়ে উঠে। এই লোক যোদ্ধা হিসেবে ছিল তৃতীয় শ্রেণীর। গুজরাটে পরাজিত হয়ে ইনি আবার পরাজিত হন বিখ্যাত রাজপুত বীর পৃথ্বীরাজ চৌহানের হাতে।
কিন্তু এ সময় পৃথ্বীরাজ একটি ভয়াবহ ভুল করা বসেন। আর তা হল পরাজিত গৌরিকেপ্রানভিক্ষা দেয়া ও নিজ রাজ্যে ফিরিয়ে দেয়া।এর উপযুক্ত মূল্য তিনি পান যখন গৌরি আবার পরের বছর দুশ’ বছর আগের তুর্কিদের মত রাতের বেলাই আক্রমন করেন।কিন্তু রাজপুতরা যোদ্ধা হিসেবে ছিলো মারাত্মক ।তাই সে অবস্থায় যুদ্ধ করেই তারা চলে যায় জয়ের কাছে।তখন দ্বিতীয় ভুলটী করেন পৃথ্বীরাজ।এ সময় গৌরি তাকে প্রস্তাব দেন তার সেরা যোদ্ধা কুতুব আইবাক এর সাথে দ্বন্দ্বযুদ্ধের।পৃথ্বী রাজী হন।এবারও পৃথ্বীই জয় এর পথে।কিন্তু তখন কৌশলেকুতুব নিয়ম ভঙ্গ করে অন্য সৈন্যদের দ্বারা পৃথ্বীরাজকে গ্রেফতার করেন।তাকে অন্ধ করে দেয়া হয়।জীবনের শেষ পর্যায়ে গিয়ে প্রতিশোধ নেন এই যোদ্ধা।অন্ধ পৃথ্বী চালাকি করে তীর চালিয়ে হত্যা করেন গৌরিকে। চির প্রতারিত এই যোদ্ধা আজো তাই ভারতের মহান বীরদের অন্যতম।যাই হোক এর পরে সময় গেছে খুব দ্রুত।এই প্রায় চারশ’ বছর উত্তর ভারতে হিন্দুরা আর খুব বেশি মাথা তুলে দাড়াতে পারে নি। গজনীর সুলতানের আল্ক্রামন,হিন্দুদের উপর গনহত্যা,সোমনাথ মন্দির ধ্বংস এসবের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারেনি তারা।
বাংলার জনগন দেখে লক্ষ্মণ সন এর কুৎসিত পলায়ন। কিন্তু এ সময় ভারতের অন্যান্য জায়গায় ছিল ভিন্ন পরিস্থিতি।প্রতিবেশি উড়িয়া রাজা নর সিংহ ছিন্নভিন্ন করে দেন মুসলিমআক্রমন।আর দক্ষিন ভারতে ছিলো বিজয় নগর সাম্রাজ্য।এদের বিশিষ্টতা হল প্রথম তারাই যুদ্ধ ক্ষেত্রে ছুঁড়ে ফেলেন সমস্ত sentiment। শত্রুপক্ষের রসদ দেয়া বেসামরিক লোকদের আক্রমন থেকে শুরু করে সামরিক কৌশলে এরা ছিল তুর্কিদের(অটোমানদের) বা European crusader দের সমকক্ষ।এর ফলে তারা প্রায় আড়াইশ’ বছর স্বাধীন থাকে।তবে ১৫৬৫ সালে পরাজিত হওয়ার পর তারা প্রত্যক্ষ করে ভয়াবহ নিষ্ঠুরতা। এ দিকে ১৫২৬ সালে ভারতে আসে মুঘালরা।তাদের শুরুর দিককার যুদ্ধ গুলো ছিলো মুসলিমদের সাথেই। তারা প্রথম যে হিন্দুর সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হন তিনি হিমু,যদিও তার বাহিনি ছিল আফগানদের নিয়ে। যাই হোক তাৎপর্যপুর্ন ভাবে মুঘালদের প্রথম বাধা দেন রাজপুতরা ।নিজেদের এলাকা রাজস্থানে তারা ছিল চির স্বাধীন।রাজপুতরা অসাধারণ যোদ্ধা তা আগেও বলেছি।তবে তাদের সমস্যা ছিলো যে তারা কখনই এক হয়ে লড়াই করেনি। বলা হয়ে থাকে রাজপুতরা এক থাকলে ভারত ত ভারত পুরো পৃথিবী জয় করাও তাদের পক্ষে সম্ভব হতো।
আর তাই মুঘালরা রাজপুতদের জন্য নিয়েছিল ‘divide and rule policy’. মুঘালদের সাথে লড়াই এর সময় প্রায় সব সময় তাদের সৈন্য সংখ্যার অনুপাত থাকত ৫:১। যাই হোক মুঘালদের সাথে রাজপুতদের সখ্যতাই ছিলো বেশি। মুঘাল আমল ই ছিলো ভারতে মু্সলমানদের শ্রেষ্ঠ সময়।তবে এখন উত্তর ভারতের কিছু রাজ্যের কথা বলা দরকার। কয়েকটি জায়গা যেমন আজকের নেপাল,হিমাচল প্রদেশ,উত্তরাখণ্ড এ মোটামুটি বিশাল এলাকা ছিলো চির স্বাধীন।অসংখ্য বার মুঘাল,আফগান,তুর্কিদের পরাজিত করে তারা।চির যোদ্ধা এখান কার মানুষরা এখনও যুদ্ধেপারদর্শী(গুর্খা,জাঠ ইত্যাদি) । এ ছাড়া উত্তরপূর্ব ভারতের বিশাল অহোম রাজশক্তি ও কখনই মুসলিম রাজত্বের অধীনে আসে নি। যাই হোক শাহজাহান এর পর সিংহাসনে তখন আওরঙজেব।
এ সময় ভারতে উথান ঘটে এমন এক জাতির যা হয়ে উঠেছিলো হিন্দুদের পুনরুথনের মূল শক্তি। জাতিটির নাম মারাঠা। জাতিটির অধিনায়ক ছিলেন খাটো কিন্তু শক্তিশালী একজন মানুষ। প্রচণ্ড মেধাবী এই মানুষটি নিয়ে আসেন নতুন নতুন সামরিক কলা-কৌশল।আধুনিক যুগে পুরো পৃথিবীতে প্রথম সূচনা করেন গেরিলা পদ্ধতির।মারাঠা স্বাধীনতা আন্দোলন(১৬৮১-১৭০৭)শুরু হয়ে যায়। ঘুম চলে যায় মুঘালদের।তবে শিবাজীর মূল কৃতিত্ব আরেক জায়গায়।আন্দোলন কে তিনি শুধু মারাঠাদের জন্য না রেখে ঘোষণা করেন সমস্ত হিন্দুদের জন্য ‘হিন্দু স্বরাজ্য’প্রতিষ্ঠার। স্বল্পায়ু শিবাজী জীবিত থাকাকালীন জয় করেন দক্ষিণ ও পশ্চিম ভারতের অনেক্টা।তার মৃত্যুর পর দিন দিন মারাঠা সাম্রাজ্য বাড়তেই থাকে।১৭০৭ সালে চূড়ান্ত ভাবে পরাজিত হয় মুঘালরা যা ছিল ভারতে একটি প্রক্রিয়ার শুরু। আর তা হলো চূড়ান্ত ভাবে মুসলিমদের ক্ষমতা চ্যুত করা। এরপর একে একে মারাঠি গ্রেট ছত্রপতি শাহু,ধানাজীযাদব,ঘোড়পারে,বাজি রাও ক্রমশ পুরো ভারতের(india,Pakistan,bangladesh)প্রায় ৮০ ভাগ মারাঠিদের অধীনে এনে দেন।উত্তরে পেশাওয়ার থেকে দক্ষিনে তামিলনাড়ু পর্যন্ত ছিলো সাম্রাজ্য।এ সময়ই ভারতে মুস্লিদের অন্তিম সময় বলা হয়। এ সময় মুঘাল শাসন ছিলো শুধু মাত্র দিল্লি শহরে আর সেখানেও তিনি ছিলেন মারাঠা অধীনে।
১৭৫৬ সালে পাঞ্জাবকে স্বাধীন করে মারাঠারা।১৭৩৮ থেকে ১৭৪৬ পর্যন্ত ছয় বার বাংলা আক্রমন করে নবাবকে পরাস্থ করে তারা।যার ফলে বাংলার নবাব ও আর স্বাধীন ছিলো না।বাংলা পরিনত হয় মারাঠাদের vessel উপনিবেশে। ১৭৫১ সালে নবাব আলিবর্দির সাথে চুক্তি হয় মারাঠাদের যে নবাব বছরে ১২ লাখ টাকা মারাঠাদের দেবেন। এ ছাড়া উড়িষ্যা ও মারাঠাদের দিয়ে দিতে হয়।বিনিময় আর বাংলা আক্রমন করে নি তারা।এ সময় থেকে বিশাল ভারতবর্ষে মুসলিমরা ক্ষমতায় ছিল মাত্র দশ ভাগ জায়গায়।তার মধ্যেও প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন নবাব ছিলেন কেবল হায়দ্রাবাদের নিজাম। এভাবে আসে ১৭৬১ সাল।আগের দুই বার আফগান সেনাপতিআব্দালি ও রোহিলা নবাবকে পরাজিত করলেও পানি পথের তৃতীয় যুদ্ধে সাহায্য হীন(জাঠ,রাজপুত কেউ সাহায্য করে নি তাদের)মারাঠারা হেরে যায়।‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ নাটকের সৌজন্যে এ কথা আমরা সবাই জানি।কিন্তু যা জানিনা তা হল এ যুদ্ধের ফলাফল ও পরবর্তী ইতিহাস।
এ যুদ্ধে মারাঠারা পরাজিত হলে মারাঠা সাম্রাজের বৃদ্ধি বন্ধ হয়ে যায়।দীল্লির উপর অধিকার হারায় মারাঠারা।যুদ্ধে আফগানরা জিতলেও তাদের এত বেশি ক্ষতি হয় যে তারা দীল্লি ছেড়ে পালায়। শুধু তাই নয় সেনা বাহিনি ভেঙ্গে পড়ায় আফগান সাম্রাজ্য এত দুর্বল হয়ে পড়ে যে অল্প কিছুদিন পর শিখ আক্রমনে তা চুড়ান্ত পরিণতি বরণ করে ।দশ বছর পর মাধব রাও পেশওয়ার নেতৃত্বে আবার উত্তর ভারত দখল করে মারাঠারা ।পানি পথের যুদ্ধের ক্ষতি সুদে আসলে উসুল করে নেয় মারাঠা।এ সময় আরেক জন মারাঠি গ্রেট ছিলেন মহতজী সিন্ধে।পানি পথের দুই চরিত্র রোহিলা নবাবকে ও অযোধ্যার নবাবকে তিনি পরাজিত করেন। এ ছাড়া এ সময় মারাঠিদের সাথে যুদ্ধ হয় টিপু সুলতানের যিনি প্রতিবারই পরাজিত হন।
এ সময় ব্রিটিশদের সাথে তিনটি যুদ্ধে জড়ায় মারাঠারা। যার প্রথম দুইটিতে জিতলেও শেষ যুদ্ধে মারাঠারা হেরে যায়।১৮১৮ সালে ইংরেজদের কাছে পরাজিত হওয়ার আগ পর্যন্ত মারাঠিরা ছিল ভারতের এক মাত্র প্রধান শক্তি।হিন্দুদের সামরিক ইতিহাসে একটা বিষয় দেখা দরকার ,তা হল এই যে মুসলিম শাসকদের বিরুদ্ধে হিন্দুদের লড়াই কখনই সাধারন মুস্লিম জনগণের বিরুদ্ধে ধর্মীয় বিদ্বেষ থেকে ছিল না।ছিল অত্যাচারি শাসকদের বিরুদ্ধে যারা নিজদেশে পরবাসী করে তুলেছিল হিন্দুদের।তাদের উপর আরোপ করেছিল জিজিয়া ইত্যাদি উদ্ভট কর, অসংখ্য হিন্দু মন্দির(>১০০০০) ভেঙ্গে হিন্দুদের ধরমান্তকরনে বাধ্য করেছিল।কিন্তু সর্বভূতে ঈশ্বরদর্শী হিন্দুকখনই নিজেদের সংগ্রামকে পরের উপর অত্যাচারে পরিণত করে নি।এখানেই হিন্দুত্বের জয়।
List of Celebrities who accepted Hinduism
Hinduism, Yoga, Ayurveda, Celebrity accepted Hinduism, Julia Roberts, IBTL
The List of Celebrities who accepted Hinduism (They did not convert just accepted this HINDU way of LIFE !) We never asked them, it is the influence of this SANATAN DHARM that made them realize they should now accept what is the true philosophy of a great and good Life !
Hinduism is a unique faith! The most obvious misconception about Hinduism is that we tend to see it as just another religion. To be precise,Hinduism is a way of life, a dharma. Dharma does not mean religion. It is the law that governs all action. Thus, contrary to popular perception, Hinduism is not just a religion in the tradition sense of the term. Out of this misinterpretation, has come most of the misconceptions about Hinduism.
From Christianity
# Chantal Boulanger - French anthropologist who wrote widely on Tamil culture
# Russell Brand - British actor and comedian.
# Claudia Ciesla - German model, actress, and singer embraced Hinduism and believes in Karma.
# Job Charnock - British trade agent who has been controversially described as the founder of Calcutta
# Ilan Chester - Venezuelan singer, keyboardist, arranger and composer
# Alice Coltrane (raised Baptist but became a follower of Satya Sai Baba) – American jazz pianist, organist, harpist, and composer
# Michael Cremo - American creationist, author, and editor
# Bhagavan Das (born Kermit Michael Riggs) – Western Yogi and former born again Christian
# Roy Eugene Davis - American Kriya Yoga teacher
# Krishna Dharma - British author and convert to Gaudiya Vaishnavism under ISKCON
# David Frawley - author on Hinduism, Yoga and Ayurveda
# Elizabeth Gilbert - author of Eat Pray Love
# George Harrison - popular English musician, best known as a member of The Beatles who died chanting the Hare Krishna Mahamantra in the company of monks fromISKCON.He is also known for donating Bhaktivedanta Manor, a Hindu temple to the Hare Krishna community in Britain.
# Ilaiyaraaja - Tamil music director.
# Christopher Isherwood - Anglo-American novelist
# Jomol - Malayali actress
# Swami Kriyananda (born J. Donald Walters) – direct disciple of the yogi Paramahansa Yogananda
# Timothy Leary - Harvard professor and American writer and psychologist
# Satsvarupa Dasa Goswami - one of the eleven senior Americans selected to become an initiating guru in ISKCON.
# Savitri Devi Mukherji (born Maximiani Portas) - French woman who became enamoured with Hinduism and Nazism, trying to synthesise Hinduism with Nazi philosophy and racial ideology
# Sister Nivedita (born Margaret Elizabeth Noble) – Anglo-Irish social worker, author, and teacher
# Leelawathy Ramanathan - Australia-born Hindu writer and activist. Converted upon marrying Ponnambalam Ramanathan
# John Levy - British philosopher who translated books on Advaita Vedanta
# Joseph Ritson - English antiquarian and traveller
# Julia Roberts - American Actress.
# Han Snel - Dutch painter of Bali
# Satyananda Stokes - Famous English farmer in Himachal Pradesh
# Bhakti Tirtha Swami (born John E. Favors) – American Hindu leader and disciple of Bhaktivedanta Swami Prabhupada
# Romapada Swami - Preacher of ISKCON.
# Kenneth R. Valpey - Gaudiya Vaishnava Theologian who studied at Oxford University, St. Cross College
# Richard L. Thompson - American mathematician, academic, creationist, and author
# Shaunaka Rishi Das (born Timothy Kiernan) – Director of the Oxford Centre for Hindu Studies
from Islam
# Bukka I - King of Vijayanagara empire who converted to Islam, then reconverted. The early life of Bukka as well as his brother Hakka (also known as Harihara I) are relatively unknown and most accounts of their early life are based on theories.
# Nargis - noted Bollywood actress, politician, and social worker. Mother of actor Sanjay Dutt she converted to Hinduism and took the name of Nirmala Dutt on her marriage to actor Sunil Dutt
# Annapurna Devi (born Roshanara Khan) - surbahar (bass sitar) player and music teacher in the North Indian classical tradition. She converted to Hinduism upon marriage.
# Harilal Mohandas Gandhi - son of Mahatma Gandhi. Upon converting to Islam he adopted the name Abdullah Gandhi, but later again reverted back to Hinduism.
# Asha Gawli - (born Ayesha) Wife of Arun Gawli, notorious gangster turned politician from Mumbai, India. She converted to Hinduism upon marriage.
# Harihara I - King of Vijayanagara Empire who converted to Islam, then reconverted
# Aashish Khan (born Ustad Aashish Khan Debsharma) – Indian musician
# Hassan Palakkode - Malayali writer on Islam
# Netaji Palkar - Maratha noble and commander-in-chief of the army of Shivaji, 19 June 1676.
# Sarmad - 17th century mystical poet and sufi saint, arrived from Persia to India, beheaded for assumed heresy by the Mughal emperor, Aurungzebe. Sarmad renounced Judaism, briefly converting to Islam and then Hinduism. He later denounced all religions and rejected belief in god.
# Anwar Shaikh - British author.
# Ifa Sudewi - Chief judge for the 2002 Bali bombing trials
# Khushboo Sundar - Tamil movie actress. She converted to Hinduism upon marriage.
# Haridas Thakura - Prominent Vaishnavite saint, instrumental in the early appearance and spread of Hare Krishna movement.
# Zubeida - Hindi film actress, on whose life story the film Zubeidaa was based. She converted to Hinduism upon marriage.
# Nalini Patel (born Nayyara Mirza) – Miss India finalist of 1967, was the first Muslim to participate in the pageant. She converted to Hinduism after marriage. She is settled in the USA.
# Sonam (born Bakhtawar Murad) – Wife of Bollywood director Rajiv Rai. She converted to Hinduism upon marriage. She is the niece of character actor Raza Murad and granddaughter of veteran character actor Murad. She is the cousin of actress Sanober Kabir.[citation needed]
From Judaism
# Krishna Das (born Jeffrey Kagel) – singer who performs Indian chants called kirtans[citation needed]
# Ram Dass (born Richard Alpert) - syncretist, and follower of the Hindu deity Hanuman. Professor of psychology at Harvard University
# Hridayananda Goswami (born Howard J. Resnick) – American spiritual leader of the International Society for Krishna Consciousness
# Tamal Krishna Goswami (born Thomas G. Herzig) – governing body commissioner of the International Society for Krishna Consciousness[citation needed]
# Radhanath_Swami (born Richard Slavin) – is a Gaudiya Vaishnava guru and a member of the International Society for Krishna Consciousness (ISKCON), author of The Journey Home: Autobiography of an American Swami[citation needed]
From other Dharmic religions ...
from Buddhism
# Mihirakula - Huna ruler.
# Rajasinghe I - Sri Lankan king who conquered Kandy
# Rishabhadatta - Satrap viceroy
# Rudradaman I - Satrap ruler and conqueror of the Satavahanas
# Vasudeva I - Kushan king and numismatist
from Jainism
# Mahendravarman I - Pallava King and patron of the arts.
# Vishnuvardhana - King of Hoysala empire and prominent temple-builder
# Tirunavukkarasar - Saivite saint and one of the most prominent of the sixty-three Nayanars
from Other faiths and religions
Charairongba – Manipuri ruler.Heliodorus – Greek minister to King BhagabhadraPamheiba – Manipuri KingSuhungmung – Ahom kingdom ruler who extended Assam up to the Kamarupa KingdomSupangmung – Ahom kingdom ruler who recaptured Guwahati. Converted toVaishnavism after a killing to make amendsSusenghphaa – Ahom king, during his rule the Ahom-Mughal conflicts began
From non-religious backgrounds
Annie Besant (former atheist) – Theosophist, orator and feministJohn Dobson (former atheist who became a believer in Vedanta) – astronomer and telescope designerSita Ram Goel (former atheist) – Indian commentator, writer and HinduactivistUndetermined former religion Russell Brand-Actor, ex-husband of Katy Perry and British comedianAgehananda Bharati (born Leopold Fischer) – academic Sanskritist, a prolific author about religious subjects, and a Hindu monk in the Dasanami SannyasiorderAlain Daniélou (convert to Shaivism) – French historian, intellectual,musicologist, and IndologistAmbarish Das (born Alfred Ford) – American businessman, great-grandson ofHenry Ford, and a follower of Bhaktivedanta Swami Prabhupada (the founder of ISKCON)Urmila Devi Dasi (born Edith E. Best) – female ISKCON educatorGeoffrey Giuliano – American biographerNina Hagen (follower of Haidakhan Babaji) – German singerAaron Joy (devotee of Adi Da and Ramakrishna) – American music critic, author, historianJoe Don Looney (follower of Swami Muktananda) – football playerJ. Mascis – Lead vocalist, guitarist, and drummer for Dinosaur Jr.John McLaughlin (became a disciple of Sri Chinmoy) – jazz fusion guitar playerLex Hixon (syncretist and disciple of Swami Nikhilananda) – poet, philosopher, spiritual practitioner and teacherMathias Rust – German daredevil pilotJ. D. Salinger – American author best known for The Catcher in the Rye but later abandoned HinduismKelli Williams – American actress who played Lindsay Dole Donnell on the ABClegal drama The Practice.Ricky Williams – Miami Dolphins football player.Crispian Mills – English rock singer named Krishna Kantha dasa. He wrote a foreword to a book by Bhaktivinoda Thakur titled Sri Siksastaka.Jeffrey Armstrong – Canadian Author, Speaker, PoetSavitri Khanolkar – Designer of India's highest gallantry award, the Param Vir Chakra.
হিন্দু বোনদের জন্য সতর্কবার্তা
অতি স¤প্রতি সিলেটের একটি ঘটনা দেশের ছোট বড় প্রায় সব কটি পত্র পত্রিকায় নিউজ হিসেবে ছাপিয়েছে। নিউজটি হল একজন সিলেটের ডাক্তার তার স্ত্রীকে তালাবদ্ধ অবস্থায় বন্দি করে হজ্জ ব্রত পালন করতে সৌদি আরব গেছেন
। বলা বাহুল্য, তালাবদ্ধ অবস্থায় বন্দিনী স্ত্রীলোকটি এককালে হিন্দু ছিলেন এবং তিনিও পেশায় ডাক্তার। লাভ জিহাদীদের খপ্পরে পড়ে নিজ পিতৃ ধর্ম পরিত্যাগ ও ভালবাসার টানে অতি আশা করে মুসলিম ডাক্তারের ঘরণী হয়েছে, আর এর চরম মূল্য কি করে দিচ্ছেন, তা আমরা সকলে পত্র পত্রিকা মারফত অবগত হলাম। এটা কোন বিচিন্ন ঘটনা নয়, এটি বহু পুরাতন ও ধারাবাহিক ঘটনার একটি মাত্র। প্রায় প্রত্যেকটি ধর্মান্তরিত বিয়ের পর ধর্মান্তরিত মেয়েদের ক্ষেত্রে এমনই হয়। কারণ মূল কারণ হলো যে ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে বিয়েটা করলেন, ঐ ধর্ম দর্শনে একজন পূরুষের ৪ এর অনধিক বিয়ে করার অধিকার এবং ভাল না লাগলে দেন মোহরের টাকা দিয়ে বিদেয় করার বিধান সংরক্ষিত করা আছে। হিন্দু মেয়েদের ধর্মান্তরিত হয়ে বিবাহ ও পরবর্তী পরিনতি বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে বহু দৃষ্টান্ত আমাদের প্রত্যেক্ষ হয়েছে নিচে এ রকম একটটি ঘটনার বিবরন হুবহু তুলে ধরলাম। এটি একজন লেখকের বরারব প্রেরিত চিঠি যা হবহু তুলে ধরা হল, সকল অববিবাহিত হিন্দু ভাই ও বোনদের পড়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি-
***********
মাননীয় রবীন্দ্রনাথ বাবু,
আপনার লেখা ‘নিঃশব্দ সন্ত্রাস’ বইটা আমার এক বন্ধুর মারফৎ পেয়ে বিশেষ মনোযোগ সহকারে পাঠ করে আমি এতই অভিভূত হয়েছি যে, বইতে দেওয়া ফোন নাম্বার যোগাযোগ করার ঠিকানা নিয়ে আপনাকে এই পত্র দিচ্ছি। আপনার বইতে আমার জীবনের একটা ঘটনার বা¯Íব চিত্র আপনি অঙ্কিত করেছেন এবং আমাদের একটা পরিবার কিভাবে ধ্বংস হয়েছে তা আপনাকে জানিয়ে মনটাকে কিছু হাল্কা করার চেষ্টা করছি। আমার জন্ম নদীয়া জেলার একটি অতি প্রাচীন ব্রাহ্মণ বংশে। আমাদের পরিবার এতই নিষ্ঠাবান যে মাছমাংস তো দূরের কথা পেঁয়াজ-রসুন, মসুর ডাল ইত্যাদিও খাওয়া বারণ। আমার ঠাকুরদাদা বেঁচে থাকতে পাঁজি-পুঁথি দেখে খাদ্য নির্বাচিত হতো; যথা- প্রতিপদে কুমড়ো, মাঘ মাসে মূলো, কুল ইত্যাদি ভÿণ নিষেধ। তাছাড়া একাদশী, অমাবস্যায় নিশিপালন, বারোমাসে তেরো পার্বন। পূজা ব্রতকথা উপবাস ইত্যাদি তো লেগেই থাকত। ব্রাহ্মণ কন্যা ছাড়া আমাদের বাড়ীতে পরিচারিকা রাখা হতো না। নদীয়া, বর্ধমানের গ্রাম অঞ্চল থেকে গরীব ব্রাহ্মণ কন্যাদেরকে বেশী মাইনে এবং খাওয়া-পরা দিয়ে নিযুক্ত করা হতো। আমার পূর্বপুরুষদের অনেক শিষ্য অবিভক্ত বাংলার বিভনড়ব জেলা, আসাম, মণিপুর ইত্যাদি অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। প্রতি বৎসর প্রচুর টাকা এম.ও. যোগে বিভিনড়ব সময় আসতো। আমার ঠাকুরদাদা যখন শিষ্য বাড়ীতে যেতেন তখন ব্রাহ্মণ পাচক সঙ্গে নিয়ে যেতেন। তিনি অন্য জাতির হাতের জল পর্যন্ত খেতেন না। এহেন গোঁড়া ব্রাহ্মণ পরিবারে আমার জন্ম। আমরা ভইবোন দুজনে যমজ; প্রথমে জন্মেছি বলে আমি বড়, তার কিছুÿণ পরে জন্মেছে বলে বোন ছোট। দুজনে মায়ের দুই ¯Íন পান করে একই বিছানায় শুয়ে বড় হয়েছি। ভাইবোনের যখন কোন অসুখ হত তখন দুজনেই ঐ অসুখে আক্রান্ত হতাম। যথা জ্বর হলে একই টেম্পারেচার, পেট খারাপ হলে একই রকম পায়খানা ইত্যাদি। আমার বাবা-মা একজনকে ডাক্তারের চেম্বারে নিয়ে গিয়ে প্রেসক্রিপশান করিয়ে এনে দুজনকে একই ঔষধ খাওয়ালে রোগ নিরাময় হতো। ছোটবেলায় চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত দুজনে পাড়ার একই স্কুলে পড়েছি এবং সববিষয়ে দুজনে প্রায় একই নম্বর পেতাম। তারপর উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত দুজনে আলাদা স্কুলে পড়েছি।
আমি ছেলেদের এবং বোন মেয়েদের স্কুলে পড়েছি। এরপর কলেজে দুজনে আবার একই কলেজ ভর্তি হই। সেই থেকেই আমাদের পরিবারে এক ভয়ানক বিপর্যয় আরম্ভ হয়। আমাদের কিছু সহপাঠী ছিল গ্রাম অঞ্চল থেকে আসা চাষী পরিবারের মুসলমান। সেই সুবাদে আমার বোন একটা গ্রাম্য মুসলমান সহপাঠীর সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মেলামেশা আরম্ভ করে। প্রায় এক বৎসর এভাবে চলার পর আমার বোন ঐ মুসলমান ছেলেকেই বিয়ে করবে বলে মনস্থির করে ফেলে। শত বোঝানোর ফলেও তাকে ফেরানো যায়নি। ধীরে ধীরে এই সংবাদ বাবা এবং পরিবারের অন্যান্যদের গোচরীভূত হয়। ইতমধ্যে বোন সকলের প্রচন্ড বাধা অতিক্রম করে গৃহত্যাগী হয়ে ঐ মুসলমান সহপাঠীর বাড়ীতে চলে যায়। সামাজিক এবং লোকলজ্জার ভয়ে আমরা থানা পুলিশ বা তাকে উদ্ধারের কোন চেষ্টাই করিনি। মুসলমান পরিবার তাকে সাদরে গ্রহণ করে ইসলাম ধর্মে দীÿিত করে তার বিবাহ সম্পনড়ব করে। এরপর লজ্জায় এবং ঘৃণায় একমাস আর কলেজ যাইনি। এরপর কলেজে যোগ দিয়ে ঐ গ্রামের অন্য মুসলমান সহপাঠীদের নিকট আমার বোনের দুঃসহ জীবনের সংবাদ পেতে থাকি, যথা খাওয়া-দাওয়ার প্রচন্ড অসুবিধা। যে দিন গোমাংস রান্না হতো, সেদিন বমি করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়া, মুসলমান জীবনের মত নিয়ম, অষ্টপাশ বন্ধন, স্বামীর সাথে কোথাও বের হলে বোরখা পরা অবস্থায় চলাফেরা, পাঁচবার নামাজ পড়া ইত্যাদি তার অসহ্য হয়ে উঠে। কিন্তু এখন আর ফেরার কোন পথ নেই। আমাদের পরিবারে তার কোন স্থান হবে না তা সে বুঝতে পারে। সে আমাকে তার অনুতপ্ত জীবনের ঘটনা জানিয়ে গোপনে এক আত্মীয়ের বাড়ীর ঠিকানায় চিঠি দিয়ে সব জানায় এবং ÿমা প্রার্থনা করে। কিন্তু দুঃখ পাওয়া ছাড়া আমার আর কিছুই করার নেই। এরমধ্যে আরম্ভ হয়ে গেছে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রচন্ড অশান্তি। সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হয় কখন না তালাক তালাক তালাক’ বলে ঘাড় ধরে ঘর থেকে বের না করে দেয়। আমি তাকে উপদেশ দিয়ে পত্র দিতাম মানিয়ে চলতে। কারণ এখন বাড়ীতে ফেরার কোন উপায় নেই। বিয়ের পরেই তার স্বামী কলেজের পড়া ছেড়ে দিয়ে গ্রামে চাষাবাদে মন দেয় এবং মাঝে মাঝে বাইরে কোথাও গিয়ে কিছু কাজকর্ম করে বাড়ী ফিরে আসে। তার ৫ বৎসর বিবাহিত জীবনে সে ৪টি সন্তানের মা হয়। কিন্তু স্বামী- স্ত্রীর মনোমালিন্য এবং অশান্তি চলতেই থাকে। এরপর খবর পেলাম তার স্বামী বাইরে কোথাও চাকুরী নিয়ে চলে গেছে এবং আমার বোন এবং বাচ্চাদেরকে তার কর্মস্থলে নিয়ে গেছে। এরপর অনেক দিন আর কোন সংবাদ পাইনি। ভাবলাম এবার হয়তো বোন একটু সুখে-শান্তিতে আছে। কিছুদিন পর আমার এক আত্মীয়ের বাড়ীর ঠিকানায় খামে এক পত্র আসে আমার নামে। খাম খুলে চিঠিটি পড়ে জানতে পারলাম বোন এখন মধ্য ভারতের কোন এক শহরের এক গণিকালয়ে অবস্থান করছে এবং তার স্বামীই মোটা টাকার বিনিময়ে ষড়যন্ত্র করে দালাল মারফৎ তাকে সেখানে বিক্রি করে দিয়েছে। তার জীবনের জন্য তার কোন দুঃখ নেই। তার কৃতকর্মের ফল সে ভোগ করছে, কিন্তু তার চারটে সন্তানের জন্য সে ভয়ানক চিন্তিত। সে লিখেছে আমি সেন একটু খোঁজ করে দেখি তার সন্তানরা কোথায় কি অবস্থায় আছে।
আমার হৃদয়ের ব্যথা কাউকে জানাবার লোক নেই তাই আপনাকে দীর্ঘ এই পত্র লিখে মনের বেদনা কিছুটা হাল্কা করলাম। আপনি হিন্দু মেয়েদের মুসলমান বিয়ে করে দুরবস্থার কথা চিন্তা করে পরিশ্রম করে বইটা লিখেছেন। তার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ জানাই।
ইতি, শ্রদ্ধাবনত.........
***********
(বিঃদ্রঃ- কোটেড অংশটি ‘নিঃশব্দ সন্ত্রাস’ নামক বই থেকে নেয়া ****** অরুন চন্দ্র মজুমদার, ঢাকা ১2/১১/২০১২ইং)
বেদে হযরত মোহাম্মদের সম্পর্কে কোন ভবিষৎবাণী নেই
বেদে হযরত মোহাম্মদের সম্পর্কে কোন ভবিষৎবাণী নেই
বেদ হিন্দুদের সর্ব্বোচ্চ ধর্মগ্রন্থ এবং অলঙ্ঘনীয়।কোন কিছু বেদে থাকলেই যে কোন হিন্দু তা মেনে নেবে আর এই সুযোগটাই কিছু দিন ধরে নিচ্ছে কতিপয় ইসলামিক মিথ্যাবাজ যারা প্রচার করছে বেদে মুহম্মদ এর কথা উল্লেখিত আছে এবং তাকে ঋষি ও স্বর্গীয় বার্তাবাহক বলা হয়েছে।তাদের এহেন দাবী পর্যালোচনা করে দেখা যাক-
অথর্ববেদ ২০/১২১/১-৩//(১)তিনি নরসংশ যার অর্থ প্রশংসিত,তিনি কৈরামা অর্থাত্ শান্তির রাজপুত্র,যিনি ৬০০৯৯ জন শত্রুর মধ্যেও নিরাপদ ছিলেন-যেহেতু মুহম্মদ শব্দের অর্থও প্রশংসিত আর তখনকার সময়ে মক্কার অধিবাসী সংখ্যাও ছিল প্রায় ৬০০০০ সেহেতু এটা মুহম্মদ কেই ইঙ্গিত করা হয়েছে//
ANALYSIS-নরসংশ শব্দের অর্থ কোনভাবেই 'প্রশংসিত' নয় বরং প্রশংসাকারী,তাই এটার অর্থ মুহম্মদ এর সমার্থক নয়।আর যদি হতও তারপরও নামের অর্থ মিল দিয়েএরুপ বলাটা হাস্যকর।যেমন ধরুন 'বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম' যার অর্থ সংস্কৃত তে 'দয়ানন্দ কি জয়'।তার মানে কি এই যে কোরানস্বামী দয়ানন্দ স্বরস্বতী এর জয় ঘোষনা করছে?কৈরামা শব্দের অর্থ আসলে হচ্ছে যিনি শান্তির সাথে পৃথিবী তে বসবাস করে।সারাজীবন অসংখ্য রক্তহ্ময়ী যুদ্ধে লিপ্ত থাকা মুহম্মদ তাই ছিলেন কি?পরন্তু মক্কার অধিবাসী কত ছিল তা কোন জায়গায় ই লিপিবদ্ধ নেই।এটা সম্পুর্নমনগড়া কল্পনা।
//(২)তিনি উট আরোহনকারী ঋষি যার রথ স্বর্গ স্পর্শ করে-যেহেতু উটের কথা বলা হয়েছে সেহেতু এটা মরুভুমির কথা।এছাড়া মনুসংহিতা(11/ 202)মতে একজন ব্রাক্ষ্মন এরউটে চরা নিষিদ্ধ সেহেতু এটাকোন ভারতীয় এর কথা বলা হয়নি//
ANALYSIS-Manusa mhita(11/202) এ বলা হয়েছে ব্রাক্ষ্মন এর নিষিদ্ধ কিন্তু বেদের এই সুক্তটি একজন রাজর্ষি বা ক্ষত্রিয় ঋষির জন্য।অপরদিকে মরুভুমিশুধু আরবে নেই ভারতেও আছে(রাজস্থান)।
// (৩)তিনি একজন 'MAMAH' ঋষি যাকে দেয়া হয়েছে ১০০ টি স্বর্নমুদ্রা,১০ টি হার,৩০০টা অশ্ব,১০০০০ গাভী-এখানে MAMAH অর্থ উচ্চ শ্রদ্ধাযুক্ত,১০ ০ টি স্বর্নমুদ্রা দিয়ে মুহম্মদএর ১০০ জন অনুসারী এবং ১০ টি হার দিয়ে ১০ জন সাহাবীকেবোঝানো হয়েছে।এছাড়া গো অর্থ গরু ছাড়াও GAW or Go to war এবং এর মাধ্যমে যুদ্ধে যাওয়া ১০০০০ সাহাবী কে বোঝানো হয়েছে।তাছাড়া গরু খুবই দয়াশীল ও শান্ত প্রানী,ঠিক যেমন ছিলেন মুহম্মদ এর ওই সৈন্যরা//
ANALYSIS-এখানে শব্দটি MAMAH নয় বরং MAMAHE(MAMA-আমি ,AHE-দেই),কোনভা বেই যার অর্থ উচ্চ শ্রদ্ধাশীল নয়।এছাড়া কোনখানেই পাওয়া যায়না যে গো অর্থ GO TO WAR হতে পারে।গোপথ ব্রাক্ষ্মন এ গো অর্থ দেয়া হয়েছে-গরু,পৃথিব ী।কিন্তু যখনই কোন উপহার অথবা দানের কথা(যেটা এখানে বলা হচ্ছে) বলা হয় তখন গরু অর্থটা প্রযোজ্য।আর গরু অর্থ দয়াশীল এবং শান্তই হয়ে থাকেতবে মুসলমানরা গরু মারে কেন?এখন আবার ১০টি হার ১০জনসাহাবী হয়ে গেছে।হাহাহা।মুস া এরও তো ১০ জন অনুসারী ছিল।তাহলে এখন ইহুদিরা যদি দাবী করে এটা MOSES এর কথা বলেছে?
তাহলে মন্ত্র ৩টির প্রকৃত অর্থ দাড়ায়-
1/He who praises,dwells peacefully is kept away from 60090 types of ANTAAHINDRIYA enemy
2/ He(the rishi of this suktam)has 20 camel riding chariot(রথ,কিন্তু মুহম্মদ কখনও রথে চড়েননি) whose chariot are reachable to heaven.
3/He who is such virtuous,I give him wealth as like as 100 gold coins,10 chaplets,300 horses,10000 cow.অর্থাত্ এখানে কোথাও মুহম্মদ সম্পর্কিত কিছু নেই।
//ঋগবেদ ১/৫৩/ ৯ এ ঋষিকে বলা হয়েছে SUSHRAMA যার অর্থ প্রশংসিত,মুহম্মদ শব্দের অর্থও একই//
আবার ও শব্দের বিকৃতি।এখানে শব্দটি হচ্ছেSUSHRAVASA যার অর্থ GOOD LISTENER/ RELIABLE FRIEND
//অথর্ববেদ ২০/২১/৬এখানে একটি শব্দ আছে Karo যার অর্থ Praying one আরবীতে যার অর্থ আহমদ,মুহম্মদ এর অপর নাম//
প্রথমত KARO শব্দের অর্থ Ofwhom,praying one নয়।উপরন্তু এখানে KARO বলতে কোন শব্দই নেই।এখানে শব্দটি হচ্ছে KARAVE যার অর্থ Action oriented।সাধারন হিন্দুদের অজ্ঝানতার সুযোগনিয়ে এসব অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা।তাই আমাদের সকলের ই বেদ শিক্ষা অত্যন্তজরুরি।
কোথা থেকে এলো আজকের কোরান?
লিখেছেন: কাজী রহমান
বিভাগ: অবিশ্বাসের জবানবন্দী, ধর্ম, নারীবাদ, ব্লগাড্ডা, মানবাধিকার, মুক্তমনা
তারিখ: ৬ মাঘ ১৪১৮ (জানুয়ারি ১৯, ২০১২)
কোরান কে লিখেছে? কখন, কোথায়, কিভাবে, কেন? সর্বশ্রেষ্ঠ শান্তির ধর্ম মহান ইসলাম থাকতেও পৃথিবীতে এতসব অন্য ধর্ম কেন? ওরা আল্লা মানছে না কেন? বাংলাদেশের মুসলমানদের মনে কখনো কখনো এই ধরনের প্রশ্ন জাগলেও এ নিয়ে কেউ খুব একটা ঘাঁটাঘাঁটি করে না কেউ, ভাবে খামোখা কি দরকার? অসুবিধা তো হচ্ছে না তেমন। বাংলাদেশের মুসলমান তো এত গোঁড়া মুসলিম না, যার ইচ্ছা হিজাব লাগায়, যার ইচ্ছা টুপি পরে, সুটবুট পরে, কোন অসুবিধা নেই। একজন সাধারণ মুসলমান, কারো সাতে পাঁচে নেই, চাকরি কিংবা ব্যাবসা করে, খায় দায়, গান গায়, জুম্মার দিনে জামাতে নামাজ পড়ে, সেজেগুজে বৈশাখী মেলায় যায়, রোজার মাসে রোজা রাখে, ঈদ চাঁদে নতুন জামাকাপড় কেনে, কেমন আছেন কেউ জানতে চাইলে আজকাল বলে আলহামদুলিল্লাহ। ঝামেলা নেই, চিন্তা নেই, ভালো আছে, বেশী কিছু জানার দরকারও নেই। ইসলামকে প্রশ্ন করা যায়না, ঈমান নষ্ট হয়ে যায়। তবে ঈমান, বিশ্বাস বা আল্লা রসূলকে সত্য মেনে প্রশ্ন করা যায়। সংশয় মনের ভেতরে রেখে ইসলাম নিয়ে প্রশ্ন? অসম্ভব। ঈমান যাবে, ঈমান নষ্ট হওয়া মানেই তো সব শেষ। তাই বাংলাদেশের মুসলমানদের জীবনে ধর্মচার জরুরী কিন্তু ধর্মজ্ঞান অপ্রয়োজনীয়, অজ্ঞতাই আদরণীয়।
আর বেশী কিছু পড়বার আগে নীচে অল্প কিছু চাঁছাছেলা প্রাথমিক তথ্যঃ
(ক) হযরত মোহাম্মদের মৃত্যু (৬৩২ খ্রিঃ) এর প্রায় ১৯ বছর পর আজকের কোরান লেখা হয়েছিলো বলে ধরা হয়।
(খ) হযরত মোহাম্মদের মৃত্যুর প্রায় ২০০ বছর পর ইমাম বুখারীর হাদিস বই লেখা হয়েছিলো বলে ধরা হয়।
(গ) প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর, দায়িত্বকাল ৬৩২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দ।
(ঘ) দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর, দায়িত্বকাল ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৪৪ খ্রিস্টাব্দ।
(ঙ) তৃতীয় খলিফা হজরত ওসমান, দায়িত্বকাল ৬৪৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দ।
(চ) চতুর্থ খলিফা হজরত আলী, দায়িত্বকাল ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৬১ খ্রিস্টাব্দ।
ধরা যাক তথ্য প্রযুক্তি বিজ্ঞানের সুবিধাজনক এই সময়ে বাংলাদেশের মুসলমান ধর্মাচারের ব্যাপার পেরিয়ে ধর্ম নিয়ে আরো একটু জানতে চাইলো। কিন্তু সমস্যা, তারা তো ঈমান, বিশ্বাস বা আল্লা রসূলকে ধ্রুব সত্য মেনে প্রশ্ন করবে, উত্তরও জানতে চাইবে সেভাবেই। জানাটা সব সময়ই ওই প্রভাবে প্রভাবিত থাকবে, ব্যাপারটা কেমন হবে? এখন আল্লা রসূলকে সত্য মেনে প্রশ্ন করা, উত্তর যা’ই হোক না কেন, তাতে ইসলাম, আল্লা এবং রসূল অবধারিত ভাবে জিতবেন। কারন সেটাই পূর্বশর্ত। অনেকটা ‘বিচার আচার সবই মানি কিন্তু তালগাছটা আমার’ এরকম ব্যাপার। এখন এই রকম পূর্বশর্ত মেনে কোন বিতর্ক কি সম্ভব? গোঁড়ায় গলদ মার্কা শর্ত নিয়ে কারা মুখে ফেনা তুলবেন? তারা কি স্বাভাবিক নাকি ঘোর লাগা দাঁড়িয়ে ঘুমানো অস্বাভাবিক মনের মানুষ? এই সব জিজ্ঞাসায় মনেমনেও তাদের পূর্বশর্ত ঠিক থাকতে হবে। সবজান্তা আল্লা সবার মনের ভিতরের খবরও জানেন। বেঈমানি চলবে না। পূর্বশর্তে, মানে ইসলাম আল্লা রসূল অপরাজেয় এইটা মানার ব্যাপারে সাচ্চা পাক্কা থাকতে হবে, না হলে মানুষটা তো মুসলমানই না।
এত কিছুর পরও ধরে নেওয়া যাক কেউ সত্যি সত্যিই গণ্ডী পেরিয়ে একটু বেশী জানতে চাইল ইসলাম নিয়ে। জানতে তার দ্বিধা লাগলেও সে ভাবল, এতে হয়ত তেমন দোষের কিছু নেই। জন্মসূত্রে মুসলমান হওয়াতে তাদের বেশীরভাগই তা জানতে পেরেছে একটু বড় হয়ে যে তারা মুসলমান। এটা তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। আপনজনেরা, যেমন মা বাবা, পরিবারের বড়রা তাদেরকে বলেছে যে তারা মুসলমান। তাই তারা তাই। তাকে তো জামা জুতোর পছন্দের মত কোনটা নেবে, হিন্দু, মুসলমান নাকি খৃষ্টান ইত্যাদি ধর্ম কোনটা নেবে, সে সুযোগ দেয়া হয়নি। কাজেই হয়ত একটু সাহস করা যায়।
যাই হোক, একটা ব্যাপার বলা দরকার, এই ব্লগে বহুবার ধর্ম নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং হতেও থাকবে। তা’হলে আবার এই লেখাটি কেন? এই লেখাটা তাদের জন্য, যাদের মাথায় ওইসব কি, কে, কখন, কেন, কিভাবে ইত্যাদি কিছু প্রশ্ন মাঝে মাঝে খেলা করে মোটাদাগে উত্তর খুঁজবার জন্য। সঙ্গোপনে খুঁজে বেড়ায় যারা সহজ সংক্ষিপ্ত কিছু তথ্যসূত্র, তাদের জন্য ওই ধরনের কিছু সূত্র দেবার চেষ্টা আছে এখানে।
কোরান লিখেছে বা সঙ্কলিত করেছে কিছু মানুষ। ফেরেস্তা টাইপের কেউ কোন পাথর টাথরে অগ্নিরশ্মি ধরনের কিছু দিয়ে এটা লেখেনি। আকাশ থেকেও পুরো বইটা হঠাৎ কোন ঠাশ্ শব্দ করে পড়েনি। অতি সাধারণ ভাবে বলা হয় যে এটা ২৩ বছর ধরে হজরত মোহাম্মদের উপর কখনো এক বা একাধিক আয়াতে, মূলতঃ জিব্রাইল ফেরেস্তার মাধ্যমে, আল্লার বানী হিসেবে নাযিল হয়েছে। কি ভাবে? হজরত মোহাম্মদের স্বপ্নে, ঘোরের মধ্যে, তন্দ্রাপ্লুত অবস্থায়, জিব্রাইল ফেরেস্তার ফুঁয়ে, বন্ধুবেশী ফেরেস্তার মাধ্যমে, সরাসরি ফেরেস্তার মাধ্যমে ইত্যাদি।
নীচে দেখুন একটা মোখতাসার; কোরান নিয়ে একনজরে সংক্ষিপ্ত কিছু প্রাথমিক তথ্যঃ
১। কোরান কে লিখেছে?
মানুষ। হজরত মোহাম্মদের জীবদ্দশায় তার কাছের সঙ্গী সাথীরা চামড়ায়, খেজুর পাতায়, পশুর হাড়ে ইত্যাদিতে আয়াত লিখে রাখতো। হজরত মোহাম্মদ কখনো এক আয়াত, কখনো একাধিক আয়াত বলতো আর মানুষ সাথী, মানে সাহাবায়েক্বেরামরা কেউ কেউ তা লিখে রাখতো নিজেদের কাছে। অনেকে মিলে তা মুখস্থও করত, কেউ কেউ শুধু মুখস্থই রাখতো। কয়েকটি আয়াতের যোগফল হল এক একটি সূরা, আর; এখনকার কোরান সেই রকম ১১৪টা সূরার যোগফলের গ্রন্থ।
২। কোরানের সঙ্কলন কখন শুরু হয়েছে?
হজরত মোহাম্মদের মৃত্যু (৬৩২ খ্রিস্টাব্দ) এর ঠিক পরপরই সঙ্কলন নিয়ে হৈ চৈ এর শুরু। হজরত মোহাম্মদের জীবদ্দশাতেও একটি কোরান সঙ্কলিত হয়েছিল যা মুখ দেখিয়েছে খুব কম সময়ই। হজরত মোহাম্মদের মৃত্যুর পর নব্য ইসলামী শক্তির নেতৃত্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয় প্রথম খলিফা হজরত আবু বকর। খলিফা আবু বকরের (দায়িত্বকাল ৬৩২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দ, বলা হয় বিষক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়) নির্দেশে, সাহাবায়েক্বেরাম যায়েদ বিন সাবেতকে নেতা করে দায়িত্ব দেওয়া হয় কোরান সঙ্কলিত করার। সে যথাসাধ্য চেষ্টা করে একটি সঙ্কলন তৈরী করে এবং তা খলিফা আবু বকরকে দেয়। অন্যান্য কিছু সাহাবা, যেমন ইবনে মাসউদ, আলী বিন আবী তালেব, মুআবিয়া বিন আবী সুফিয়ান ও উবাই বিন কা’ব প্রমুখ রাও নিজ দায়িত্বে কিছু সঙ্কলন করে।
৩। কোরানের এই সঙ্কলনটিই কি আজকের কোরান শরীফ?
না, এটি সেটি নয়। নীচে দেখুন।
৪। কোরানের সঙ্কলন কেন শুরু হয়েছিলো?
কিছু হাফেজ ক্বারী সাহাবা যারা কোরানের অনেকখানি মুখস্থ রেখেছিলো, তাদের অনেকেই ইয়ামামা নামের একটি যুদ্ধে নিহত হয়। মুখস্থকারীদের সাথে সাথে কোরানও যাতে হারিয়ে না যায় সেই প্রচেষ্টার অংশই ছিলো এই প্রাথমিক সঙ্কলনের মূল কারন।
৫। যায়েদ সঙ্কলিত কোরানই কি আজকের কোরান? এরপর কি হোল?
না, এটিও নয়। প্রথম খলিফা হজরত আবু বকরের মৃত্যুর পর আরব বিশ্বে ইসলামী শক্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত হয় দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর (দায়িত্বকাল ৬৩৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৪৪ খ্রিস্টাব্দ, আততায়ীর হাতে নিহত হয় বলে বলা হয়)। যায়েদের করা সঙ্কলনটি এবার হজরত ওমর নিজের হেফাযতে রেখে দেয়। খলিফা ওমরের মৃত্যুর পর ওই সঙ্কলনটি অল্প কিছুদিনের জন্য তার মেয়ে হাফজা’র হেফাজতে থাকে।
৬। কোরান তা’হলে আজকের মত হল কি করে?
এইবার এলো তৃতীয় খলিফা হজরত ওসমান (দায়িত্বকাল ৬৪৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দ, দলীয় কোন্দলে নিহত বলে কথিত)। তৃতীয় এই খলিফা ক্ষমতায় বসেই কোরানের একাধিক সঙ্কলনের দ্বন্দ্বের ঝামেলার মুখোমুখি হয়ে যায়। তখন দেখা যায় যায়েদের কোরান সঙ্কলন, অন্যান্য সাহাবাদের কোরানের সঙ্কলন এবং অন্যান্য নানান সাহাবাদের দাবীকৃত মুখস্থ কোরানের আয়াত একে অন্যের সাথে মিলছে না। তিনি এসময় যায়েদের প্রথম সঙ্কলনটাকে স্ট্যান্ডার্ড ধরে নতুন একটা সঙ্কলন করিয়ে নেন। কথিত আছে লোক দেখানো ভাবে তিনি কিছু কিছু নামকরা সাহাবাক্বেরাম ও ইসলামী পণ্ডিতদের সাথে এ নিয়ে পরামর্শ করে নতুন কোরানের কপি বিভিন্ন প্রদেশে পাঠিয়ে দেন। অন্যসব সঙ্কলন পুড়িয়ে ফেলবার হুকুম দিলেন এই খলিফা। তৈরী হল আজকের কোরানের কথিত মূল সঙ্কলন, আনুমানিক ৬৫১ খৃষ্টাব্দে। মতভেদে অবশ্য বলা হয় আজকের কোরান আরো পূর্নাঙ্গ হয় প্রায় ৮০০ খৃষ্টাব্দের দিকে। আরো কজন মুসলিম শাসকের হাত ঘুরে, শত শত বছর ধরে আরো পরিবর্তিত হয়ে, হাতকপি, কাঠের ব্লককপি, ছাপাখানা প্রযুক্তি কপি এবং তারপর অনুবাদকবৃন্দের অনুবাদ কপিতে রূপান্তরিত হয়ে হল আজকের এই কোরান।
৭। হজরত আলীর কোরান তা’হলে কোনটা?
ইসলামী সাম্রাজ্যের চতুর্থ খলিফা হজরত আলী (দায়িত্বকাল ৬৫৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে ৬৬১ খ্রিস্টাব্দ, চরমপন্থীদের দ্বারা নিহত বলে কথিত)। হজরত আলীর আমলেও হজরত ওসমানের সর্বশেষ ও সর্বাধুনিক কোরান সর্বজন স্বীকৃত হয়নি। আজকের ইরাক অঞ্চলের ওই সব মুসলমানেরা ওসমানের এই সঙ্কলনটি প্রত্যাখ্যান করতে থাকে। বলতে থাকে যে সেটির সাথে উব্বে ইবন মাসুদের মত সম্মানিত সাহাবাক্বেরামও একমত নন। খলিফা হয়ে হজরত আলীও ওসমানের সঙ্কলিত কোরানে অসংগতি ও ক্রমবিপত্তির কথা দৃঢ় ভাবে বলেন। এটি বদলে নতুন একটি সঙ্কলনের চেষ্টাও করেন, কিন্তু সেটি সর্বজন স্বীকৃত হয় না। মোটামুটি ভাবে ওসমান সঙ্কলনটিই তখন থেকে টিকে যায়।
যেঁচে পড়ে এসব তথ্য এমনি এমনি দেওয়া হয়নি। একটু ভাবনার জন্য দেওয়া হয়েছে। মানুষের দ্বারা কোরানে আয়াত ইচ্ছামত বাদ দিয়ে দেওয়া, ইচ্ছামত সঙ্কলন করা, স্ববিরোধী বা পরস্পর বিরোধী আয়াত, আয়াত রহিত করা, আগের মক্কি সূরা কোরানে রেখেও ওই সব এক একটি সূরার বদলে নতুন বিদ্বেষপূর্ণ হিংস্র অন্য সূরা প্রতিস্থাপন, নির্ভুল কোরানে একের পর এক ভুল, একই ব্যাপারের বিবরণ এক এক যায়গায় এক এক রকম, মেয়েদেরকে ছোট করা, পুরুষদের বড় করা এবং বেহেশতে চির কুমারী হুর উপহার দেওয়া, অথচ মেয়েদের জন্য এই পৃথিবীতে কড়া নিষেধের বেড়াজাল আর বেহেশতে গেলে আলতু ফালতু আঙ্গুর বেদানা পুরষ্কার, ছেলেদের জন্য মদ ও যৌনতৃপ্তির জন্য চির যৌবনা মেয়ে আর সমকামী পুরুষের জন্য কিশোরবালক, কিন্তু সম্পদে সাক্ষীতে তুচ্ছ মেয়েরা, ছেলেরা শক্তিমান মহান, ইত্যাদি আরো অনেক অনেক বৈষম্য। মানুষ মানে হজরত মোহাম্মদের বয়ানে আর খলিফার তাড়াহুড়ায় তৈরী কোরানের এতসব; যদি বাঙ্গালি কোন মোল্লা ছাড়াই; বাংলায় পড়ে বুঝে ফেলে, তা’হলে যে গুমোর ফাঁস হয়ে যাবে। কোরান নিজেই ইসলামের জন্য হূমকি হয়ে যাবে।
ইসলাম নিয়ে নিজ ভাষায় কিছুটা বেশী জানলে বাংলাদেশের মুসলমান ভালো রকমের সংশয়ের গ্যাঞ্জামে পড়ে যাবে, হয়ত ভাববে তাদের ঈমান ঝুঁকির মধ্যে পড়ে গেলো। ভাববে জানার কি-ই-ই দরকার খামোখা, তার চেয়ে অজ্ঞ থাকাই ভালো, আচার অনুষ্ঠান করে করেই পুল সিরাত পার হয়ে যাওয়া যাক। নাকি কেউ কেউ আবার অতি গোঁড়ামি ছেড়ে, আরো কিছু পড়ে জেনে কিছুটা বাঙালী হয়ে যাবে? নাকি হয়ে যাবে মুক্তমনের মানুষ? ব্যাপারটা কি অত সহজ হবে? কে জানে, হয়তো বা, কোন এক দিন।
-x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-
আরো লেখা লিঙ্কঃ সূরা মোখতাসার ১, সূরা মোখতাসার ৩, সূরা মোখতাসার ৪, সূরা আল মূত্ত্যাজিয়া, হিজাবী মেয়ে বেহেস্তি সুখ
-x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-x-
নারীদের প্রতি ইসলামি বর্বরতার আরেকটি নিদর্শনঃ নারীর খতনা
এ লেখাটি আমার প্রাপ্তবয়স্ক এবং প্রাপ্ত মনস্ক বন্ধুদের জন্য।আমার ফেসবুক আইডিতে কোন অপ্রাপ্ত বয়স্ক বন্ধু না থাকায় লেখাটি দিলাম আশা করি প্রাপ্ত বয়স্করা প্রাপ্ত মনস্কও হবেন।
মুসলিম দুনিয়ার বহু দেশেই নারী খৎনা নামের এক বীভৎস,বর্বরোচিত ধর্মীয় প্রথা প্রচলিত রয়েছে।এ ধর্ম নাকি নারী পুরুষের সমতা বিধান করে।তাহলে দেখে নিন কি ভাবে সেই সমতা বিধান করা হয়।
মুসলিম দুনিয়ার বহু দেশেই নারী খৎনা নামের এক বীভৎস,বর্বরোচিত ধর্মীয় প্রথা প্রচলিত রয়েছে।এই প্রথা মনুষ্য সমাজের কলঙ্ক বই কিছুই নয়।এই প্রথা পুরুষকে মানুষ থেকে শয়তানে পরিণত করেছে।আর নারীকে পরিণত করেছে পশুতর জীবে।এই প্রথা আজও প্রচলিত আছে ঘানা,গিনি,সোমালিয়া,কেনিয়া,তানজানিয়া,নাইজেরিয়া,মিশর,সুদানসহ উপসাগরীয় বিভিন্ন দেশে।এই সব দেশে নারীদের যৌন কামনাকে অবদমিত করে যৌন-আবেগহীন যৌন-যন্ত্র করে রাখতে পুরুষশাসিত সমাজ বালিকাদের ভগাঙ্কুর(clitoris)কেটে ফেলে।নারীর যৌন-আবেগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয় যোনির প্রবেশ মুখে পাপড়ির মত বিকশিত ভগাঙ্কুর।নারীদের খৎনা করা হয় ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগে অর্থাৎ সাধারণত সাত-আট বছর বয়সে।খৎনা যারা করে তাদের বলা হয় হাজামী।দু’জন নারী শক্ত করে টেনে ধরে বালিকার দুই উরু।দু’জন নারী চেপে ধরে বালিকার দুই হাত।হাজামী ছুরি দিয়ে কেটে ফেলে ভগাঙ্কুর।এই সময় উপস্থিত নারীরা সুর করে গাইতে থাকেন, “আল্লাহ মহান,মুহম্মাদ তার নবী;আল্লাহ আমাদের দূরে রাখুক সমস্ত পাপ থেকে।”পুরুষ শাসিত সমাজ ওই সব অঞ্চলের মস্তিষ্ক স্নায়ুকোষের রন্ধ্রে রন্ধ্রেই বিশ্বাসের বীজ রোপন করেছে,কাম নারীদের পাপ;পুরুষদের পূণ্য।খৎনার পর সেলাই করে দেওয়া হয় ঋতুস্রাবের জন্য সামান্য ফাঁক রেখে যোনিমুখ।খোলা থাকে মূত্রমুখ।খৎনার পর চল্লিশ দিন পর্যন্ত বালিকার দুই উরুকে একত্রিত করে বেঁধে রাখা হয় যাতে যোনিমুখ ভাল মত জুড়ে যেতে পারে।বিয়ের পর সেলাই কেটে যোনিমুখ ফাঁক করা হয়,স্বামীর কামকে তৃপ্ত করার জন্য।আবারো বলি,স্বামীর কামকে তৃপ্ত করার জন্যই;কারণ নারীর কাম তো ওরা পাপ বলে চিহ্নিত করে নারীকে করতে চেয়েছে কাম গন্ধহীন যৌন-যন্ত্র।সন্তান প্রসবের সময় সেলাই আরো কাটা হয়।প্রসব শেষেই আবার সেলাই।তালাক পেলে বা বিধবা হলে আবার নতুন করে আবার নতুন করে সেলাই পড়ে ঋতুস্রাবের জন্য সামান্য ফাঁক রেখে।আবার বিয়ে,আবার কেটে ফাঁক করা হয় যোনি।জন্তুর চেয়েও অবহেলা ও লাঞ্ছনা মানুষকে যে বিধান দেয়,সে বিধান কখনই মানুষের বিধান হতে পারে না।এ তো শুধু নারীর অপমান নয়,এ মনুষ্যত্বের অবমাননা।
এ সম্পর্কে আরও জানতে হলে দেখুন http://bn.wikipedia.org/wiki/নারী_খৎনা
এ লেখাটির প্রচারে আমি এ জন্য পক্ষপাতি যে আমাদের বোনদের জানা উচিত ইসলামের প্রকৃত সত্য যাতে অন্তত লাভ জিহাদিদের ফাঁদে পড়ে নিজেদের জীবনটা নষ্ট না করে। এ উপমহাদেশে ইসলাম হিন্দু ধর্মের প্রভাবে আজ কিছুটা সভ্য হয়েছে কিন্তু আসল ইসলাম এখনও রয়ে গেছে আরব আফ্রিকাতে।
Subscribe to:
Posts (Atom)